উদয়ন গুহ।
উদয়ন গুহের উপরে হামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কিন্তু তিনি একবারও উদয়নের খোঁজ নেননি। তৃণমূলের ওই অভিযোগ নিয়ে নতুন করে সরগরম হয়ে উঠেছে দিনহাটা। রবিবার শাসকদলের নেতা তথা দিনহাটার প্রাক্তন বিধায়ক উদয়ন তাঁর সেলাই করা হাতের ছবি-সহ একটি লেখা সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট করেন। তিনি তাতে লিখেছেন— “যত দিন না হাতের এই দাগ মিলিয়ে যাচ্ছে, তত দিন জগদীপবাবুকে বার বার দিনহাটায় আসতে হবে বিজেপি কর্মীদের সান্ত্বনা দিতে।”
তার পর থেকেই নতুন করে রাজ্যপাল প্রসঙ্গ উঠতে শুরু করে। সেই সঙ্গেই অবশ্য প্রকাশ্যে ফেসবুকে বিজেপি কর্মীদের হামলার হুঁশিয়ারি নিয়ে দলের মধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে উদয়নকে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “বিজেপির হয়ে রাজ্যপাল যা করছেন তা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু উদয়ন গুহের মতো এক জন নেতার মুখেও এমন কথা মানায় না।”
৬ মে দিনহাটায় আক্রান্ত হয়েছিলেন উদয়ন। লাঠি ও রড নিয়ে তাঁর উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে। তাতে তাঁর ডান হাত ভেঙে যায়। কলকাতায় ওই হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। টানা চিকিৎসার পরে ছুটি পান তিনি। অভিযোগ, উদয়নকে যাঁরা আক্রমণ করেছিলেন তাঁরা এক সময় যুব তৃণমূল করতেন। বিশেষ করে প্রধান অভিযুক্ত যুব তৃণমূলের নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিধানসভা ভোটের আগে ওই নেতা সদলবলে বিজেপিতে যোগ দেন।
১৩ মে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের খোঁজে কোচবিহারে পৌঁছন রাজ্যপাল। তিনি মাথাভাঙা, শীতলখুচি, সিতাই হয়ে দিনহাটায় যান। অভিযোগ, দিনহাটায় উদয়নের উপরে হামলায় যিনি প্রধান অভিযুক্ত তাঁর বাড়িতেও গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে উদয়নের বাড়ি খুব বেশি দূরে নয়। অভিযোগ, তার পরেও রাজ্যপাল উদয়নের খোঁজ নেননি। পরে সন্ধ্যায় রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, তিনি উদয়ন গুহের উপরে হামলার বিষয়টি জানেন না। অভিযোগ, কলকাতায় ফিরে যাওয়ার পরেও উদয়নের খোঁজ নেননি রাজ্যপাল।
উদয়ন বলেন, “বিজেপি যে সন্ত্রাস তৈরি করেছে তা সবাই দেখছেন। আমার উপরেও হামলা হয়েছে। ওই হামলার জবাব এ বারে মানুষ দেবেন। অভিযুক্তরা রেহাই পাবেন না।”
বিজেপির দাবি, নির্বাচনের ফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকে দিনহাটার একাধিক বিজেপি কর্মীর বাড়ি লুঠ হয়েছে। রাজ্যপাল যে যে বাড়িতে গিয়েছিলেন, প্রতিটি বাড়ি ভাঙচুর করে লুঠ করা হয়। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা দিনহাটার বাসিন্দা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “উদয়ন গুহের উপরে হামলার ঘটনা একদম মেনে নেওয়া যায় না। আমার উপরেও এক বার হামলা হয়েছিল, মাথায় ১১টি সেলাই পড়েছিল। যাই ঘটুক প্ররোচনামূলক কোনও বক্তব্য না করে দিনহাটাকে সুন্দর ও শান্ত রাখা এক জন পরিণত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কাজ বলে মনে করি।”