রোলকল না করায় শিক্ষককে মেরে মুখ ফাটালো দুই ছাত্র!

এক শিক্ষককেই বেধড়ক পেটাচ্ছে দ্বাদশ শ্রেণির দুই পড়ুয়া। তাদের মধ্যে একজন আবার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যার ছেলে। ওই দুই ছাত্রকে ঘিরে রয়েছে আরও কয়েকজন পড়ুয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিশচন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০২:২৩
Share:

শিকার: স্কুলে প্রহৃত শিক্ষক জিতেন পাল। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের সামনে হট্টগোল শুনে পড়ুয়ারা মারামারি করছে ভেবে থামাতে ছুটে গিয়েছিলেন শিক্ষকেরা। কিন্তু সেখানে গিয়েই চোখ কপালে উঠল শিক্ষকদের।

Advertisement

এক শিক্ষককেই বেধড়ক পেটাচ্ছে দ্বাদশ শ্রেণির দুই পড়ুয়া। তাদের মধ্যে একজন আবার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যার ছেলে। ওই দুই ছাত্রকে ঘিরে রয়েছে আরও কয়েকজন পড়ুয়া। শিক্ষকের মুখ থেকে রক্ত ঝরছে। শিক্ষকদের দেখেই পালাতে শুরু করে তারা। কিন্তু এক ছাত্রকে ধরেও ফেলেন শিক্ষকেরা। কিন্তু তাকে শিক্ষকদের হাত ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় বাকি কয়েকজন পড়ুয়া। সোমবার দুপুরে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুলে ওই ঘটনাকে ঘিরে ছাত্র ও শিক্ষক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। আহত শিক্ষক জিতেন পালকে উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

জিতেন অবশ্য স্থায়ী শিক্ষক নন। চুক্তির ভিত্তিতে স্কুলে পদার্থবিদ্যা পড়ান তিনি। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মফিজুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘আমি স্কুলের কাজে বাইরে। এমন ঘটনা ঘটতে পারে ভাবতেই পারছি না। যারা এ কাজ করেছে, তারা চরম অন্যায় করেছে। স্কুলের তরফেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

স্কুল সূত্রের খবর, দ্বিতীয় পিরিয়ডের পর কমন রুমে ফিরছিলেন শিক্ষক জিতেন। ওই সময় স্কুল চত্বরেই তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের দুই ছাত্র মুকেশ শর্মা ও প্রবীর দাস। ঘুসিতে ঠোঁট ও নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে শিক্ষকের। হইচই শুনে তিন শিক্ষক হাজির হতেই পালানোর সময় একজনকে ধরেও ফেলা হয়। কিন্তু তাকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে জনা পাঁচেক সহপাঠী।

প্রহৃত শিক্ষক বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের প্রত্যককে নামে চিনি। তাই রোলকল না করে হাজিরা খাতায় উপস্থিত পড়ুয়াদের প্রেজেন্ট করে দিই। কিন্তু কেন নাম ডাকা হবে না তা নিয়ে আমার সঙ্গে নিয়মিত বচসা জুড়ে দেয়, এমনকি হুমকিও দেয় মুকেশ।

যদিও এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওয় মুকেশের দাবি, এ দিন ক্লাস থেকে ফেরার সময় জিতেনবাবু আমাকে দেখেই মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিন শিক্ষক আমাকেই মেরেছেন।

মুকেশের মা রেনু শর্মা বলেন, ঘটনা যা-ই হোক, ছেলেই অন্যায় করেছে। ওর ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিষয়টি যাতে মিটে যায় তা দেখতে শিক্ষকদের কাছে আবেদন করব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement