Bomb Blast Case

বল ভেবে রাস্তা থেকে বোমা তুলে এনেছিল মালদহের খুদে, লাথি মারতেই বিস্ফোরণ!

মঙ্গলবার সকালে বালুটোলার বাসিন্দা আসিরুল ইসলাম বাড়ির পাশে আমবাগানে খেলেত গিয়েছিল। তার সঙ্গে পাড়ার আরও ৫-৬টি শিশু ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানিকচক শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৫২
Share:

জখম শিশুকে কোলে নিয়ে আতঙ্কিত মা। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তায় পড়েছিল বলের মতো দেখতে একটি জিনিস। শিশুমনে বল ভেবে সেটিকে কুড়িয়ে বাড়ি নিয়ে এসেছিল খুদে। ঠাকুমাকে বলেছিল, বল কুড়িয়ে পেয়েছে। সেটা নিয়ে তুতো ভাইয়ের সঙ্গে খেলতে যেতেই ঘটল বিস্ফোরণ! প্রচন্ড শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। গুরুতর জখম হয় দুই শিশু। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মানিকচক থানা এলাকায়। জখম দুই শিশুর এক জনের বয়স ৫ এবং অন্য জনের বয়স ৯ বছর। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মানিকচক থানার বালুটোলা এলাকায়।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে বালুটোলার বাসিন্দা আসিরুল ইসলাম বাড়ির পাশে আমবাগানে খেলেত গিয়েছিল। তার সঙ্গে পাড়ার আরও ৫-৬টি শিশু ছিল। ৯ বছরের আসিরুলের চোখ যায় ইটভাটার কাছে মাটিতে পড়ে থাকা বলের মতো দেখতে একটি জিনিসকে। সে সেটি তুলে নিয়ে বাড়ি চলে আসে। তুতো ভাইকে ডেকে খেলতে যেতেই বিস্ফোরণ ঘটে। দুই শিশুই আহত হয়।

জখম দুই শিশুকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫ বছরের আব্দুল মোমিনের কপাল চোট লেগেছে। তার মায়ের কথায়, ‘‘আমার ভাসুরের ছেলে বোমাকে বল ভেবে বাড়ি নিয়ে এসেছিল। আমার শাশুড়িকে জিজ্ঞেস করেছিল ‘এটা কী?’ উনি বল চেনেন না। কিছু বলতে পারেননি। তার পর ও কয়েক জনকে নিয়ে ওটি ফেলে দিতে যায়। তখনই বিস্ফোরণ হয়।’’ তবে কোথা থেকে এই বোমা এল তা বলতে পারেননি স্থানীয়েরা। তবে ওই মহিলার কথায়, ‘‘এখনও ভয় করছে। বাচ্চারা যদি এ ভাবে বোমা কুড়িয়ে আনে তা হলে কী হবে!’’

Advertisement

যে শিশুটি ওই বোমা কুড়িয়ে আনে সে বলে, ‘‘আমি বল ভেবে নিয়ে এসেছিলাম। মা বলল ফেলে দিতে। তখন ফেলে দিতে যাই। লাথি মারতেই ফেটে যায়। আমার পেট, পায়ে আঘাত লেগেছে।’’ তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্র জানায় তার বন্ধুদের কয়েক জনও চোট পেয়েছে।

এই বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মানিকচক থানার পুলিশ। কোথা থেকে ওই বিস্ফোরক এল, আরও বিস্ফোরক ওই জায়গায় আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর প্রধান পদ নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল হয় এই মানিকচক এলাকায়। বোমাবাজি এবং গুলির লড়াইয়ে সে বার ২ জনের মৃত্যু হয়। এর পর গত ১৭ জুলাই মানিকচক থানার গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোমা বিস্ফোরণে ৩ জনের মৃত্যু। তার পর মঙ্গলবারের ঘটনা।মভ্হলবার ঘটনাস্থল পরীক্ষা করতে বম্ব স্কোয়াডের একটি টিম এলাকায় যায়। আরও বোমা মজুত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।সামনে আবার একটি পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় অশান্তির জন্য বোমা মজুত করছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই অঞ্চলের পাশেই ঝাড়খণ্ড। মাঝে কেবল গঙ্গা নদী। ফলে ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীদের বিজেপি ব্যবহার করে এখানে বোমা মজুত করছে। সেখান থেকেই এই অঘটন।’’অন্য দিকে বিজেপির দক্ষিণ মালদহের সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘২০১৮সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে উত্তপ্ত এই গোপালপুর অঞ্চল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement