তোলা চেয়ে এমনই চিঠি এসেছে। নিজস্ব চিত্র
পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের কাজের ঠিকাদারকে ‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন’ (কেএলও)-এর নাম ছাপানো প্যাডে তোলা চেয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল মালদহ জেলা পুলিশ। রবিবার রাতে ঠিকাদার সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে হবিবপুরের ধুমপুর পঞ্চায়েতের ভাবসা গ্রাম থেকে তাদের ধরা হয়। কেএলওর নাম ব্যবহার করে কি তোলাবাজির চেষ্টা হয়েছে, না ফের হবিবপুরে মাথা চাড়া দিচ্ছে কেএলও, প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। ধৃত রাহুল বর্মণ ও কানাই বর্মণের বাড়ি হবিবপুরের ধুমপুর পঞ্চায়েতের জিয়াকান্দর ও সাদাপুর গ্রামে। সোমবার মালদহ জেলা আদালতের বিচারক ধৃতদের ১০ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “ঠিকাদার সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও খোঁজ চলছে।” হবিবপুরে পুলিশ পিকেটও বসানো হয়েছে।
প্রশাসনের দাবি, পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পে জেলা জুড়ে রাস্তার কাজ চলছে। হবিবপুর ব্লকের ধুমপুর পঞ্চায়েতের গুহিনগর থেকে ভাবসা পর্যন্ত প্রায় ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দু’কিলোমিটার পিচ রাস্তার কাজ চলছিল। মালদহের মোথাবাড়ির এক ঠিকাদার সে রাস্তার কাজের বরাত পান। শনিবার বিকেলে ঠিকাদার সংস্থার ম্যানেজার বিফল রায় ও এক কর্মী ভাবসা গ্রামে রাস্তার কাজ দেখতে যান। অভিযোগ, সে সময় একাধিক মোটরবাইকে ২০-২৫ জনের একটি দল ঘটনাস্থলে হাজির হয়। এর পরে, ‘কেএলও’র নাম ছাপানো প্যাডে পাঁচ লক্ষ টাকার দাবি লিখে দলটি ম্যানেজারের হাতে দেয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ম্যানেজারের ফোন থেকে এক ঠিকাদার বাপি রায়কেও ফোন করে পাঁচ লক্ষ টাকা চাই দুষ্কৃতীরা। এমনকি, টাকা না দিলে প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় দলটি বলে অভিযোগ।
রবিবার পুলিশে অভিযোগ জানান বিফল। তিনি বলেন, “দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই মুখ ঢেকে ছিল। কাউকে চিনতে পারিনি। তবে তাদের একটি মোটরবাইকের নম্বর শনাক্ত করে পুলিশকে দিয়েছি। ঘটনার পর থেকে খুবই আতঙ্কে রয়েছি।” বাপি বলেন, “কেএলওর নাম করে আমাকে ম্যানেজারের ফোন থেকে হুমকি দেওয়া হয়। দুষ্কৃতীরা চিঠিও দিয়ে গিয়েছে। ভয়ে কর্মীরা কেউ কাজ করতে চাইছেন না।” মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) জামিল ফতেমা জেবা বলেন, “পুলিশ বিষয়টি দেখছে। ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হবে।”
হবিবপুরে এক সময় ‘কেএলও’-র রমরমা ছিল। এমনকি, কেএলও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ফলে, কেএলও-র নাম ছাপানো প্যাডে চিঠি দিয়ে তোলা চাওয়ার অভিযোগ নিয়ে তৎপর পুলিশ। ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদহের পুলিশ সুপারপ্রদীপকুমার যাদব।