মনমোহন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
মনমোহন সিংহের প্রয়াণে রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে সকলেই শোকপ্রকাশ করেছেন। দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোকবার্তা আসছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও। কেউ প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান, কেউ বর্তমান বিদেশসচিব। মনমোহনের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সকলেই।
আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজ়াই মনমোহনকে সে দেশের বিশ্বস্ত সঙ্গী এবং বন্ধু বলে উল্লেখ করেন। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “ভারত তার অন্যতম মহান সন্তানকে হারাল। তাঁর প্রয়াণে আমি শোকাহত। তাঁর পরিবার, ভারত সরকার এবং ভারতের জনগণকে আমি গভীর সমবেদনা জানাই। তাঁর আত্মা চিরশান্তি পাক।”
মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ লেখেন, “মনমোহন সিংহের প্রয়াণের খবর শুনে আমি দুঃখিত। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সর্বদা সমৃদ্ধ হয়েছি। তিনি মলদ্বীপের ভাল বন্ধু ছিলেন।”
অনেকে মনে করে থাকেন, মনমোহনের প্রধানমন্ত্রিত্বেই ভারত রুশ-নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসে এবং দানা বাঁধতে শুরু করে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ক। তবে রাশিয়ার সঙ্গেও উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন মনমোহন। সেই উষ্ণতার ছোঁয়া রইল শেষ মুহূর্তেও। ভারতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ডেনিস অ্যালিপভ সমাজমাধ্যমে মনমোহনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখলেন, “ভারত এবং রাশিয়ার জন্য এটা গভীর দুঃখের সময়। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মনমোহন সিংহের ভূমিকা অপরিসীম।”
অনেকেই মনে করে থাকেন ঠান্ডা যুদ্ধের আগে থেকেই ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে সম্পর্কের যে ‘শীতলতা’ ছিল, তা কাটে মনমোহনের আমলেই। ২০০৮ সালে বামেদের আপত্তি উড়িয়েই আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করেন তিনি। সেই মনমোহনের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, “মাননীয় (মনমোহন) সিংহ ভারত-আমেরিকা কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে অন্যতম সফল ব্যক্তি।” গত দু’দশকে ভারত এবং আমেরিকার সম্পর্ক যে ‘উচ্চতায়’ পৌঁছেছে, তার স্থপতি হিসাবেও মনমোহনকে কৃতিত্ব দিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। আমেরিকার বিদেশসচিব এই প্রসঙ্গে স্মরণ করেছেন মনমোহনের আমলে হওয়া ভারত-আমেরিকা পরমাণু চুক্তি এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা।
কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার মনমোহনের মেধা, জ্ঞানের প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহাল ওরফে প্রচন্ড তাঁর শোকবার্তায় মনমোহনকে ‘দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা’ বলে উল্লেখ করেন। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে মনমোহন সম্পর্কে লেখেন, “দৃরদৃষ্টিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ এবং ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণের স্থপতি।”