করোনার টিকা নেওয়ার পরই নাকি চুম্বকীয় শক্তি তৈরি হচ্ছিল শরীরে। হাতা-খুন্তি থেকে কয়েন, চাবি, কাঁচি, গায়ে ঠেকালেই সেঁটে যাচ্ছিল সব কিছু। কিন্তু গায়ে পাওডার পড়তেই গায়েব চুম্বকীয় শক্তি। কোভিড টিকা নিয়ে বিবিধ গুজবের মধ্যে এ বার এমন ঘটনা ঘটল রায়গঞ্জে।
কোভিড টিকা নেওয়ার পর গায়ে লোহার জিনিস সেঁটে যাচ্ছে বলে একাধিক জায়গা থেকে খবর উঠে আসছে। রায়গঞ্জের বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর গ্রামেও সম্প্রতি এমনটাই ঘটে। গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তিরা স্বদেশ দাসের বাড়িতে টিকা নিতে ভিড় জমিয়েছিলেন। তার পর অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা হয় বলে শোনা যায়।
সেই থেকে ওই হাতুড়ে ডাক্তারের বাড়িতে ভিড় উপচে পড়ছিল। তবে টিকা নিতে নয়, টিকা নেওয়ার পর কত জনের শরীর চুম্বকে পরিণত হচ্ছে, তা দেখার জন্যই হুমড়ি খেয়ে পড়েন অনেকে। এ নিয়ে লোকমুখে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তাতে টিকা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় মানুষ।
বিষয়টি জানতে পেরে গুজব কাটাতে নেমে পড়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাই। টিকা নেওয়ার পর গায়ে চুম্বকীয় শক্তি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছিলেন যাঁরা, তাঁদের গায়ে পাউডার লাগিয়ে দেন তাঁরা। তাতেই দেখা যায়, আর কোনও জিনিস গায়ে সেঁটে যাচ্ছে না। তাতে অবাক হয়ে যান স্বদেশবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘এটা ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না।’’ তার পর নিজেই সকলকে বোঝালেন, সব গুজব। টিকা নিরাপদ। কোনও ভয় নেই।
এ ব্যাপারে আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের মালদহ জেলার সহ সম্পাদক সুনীলকুমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, ‘‘এটা কুসংস্কার। এখন বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি। এই সময় পৃষ্ঠতল চওড়া এমন বাসনপত্র শরীরে রাখলেই সেঁটে যাবে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, গায়ে চৌম্বকীয় ক্ষেত্র কাজ করছে। কিন্তু তা আদৌ নয়। এর পিছনে পৃষ্ঠটান কাজ করছে। গত কয়েক দিন ধরে এমন বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেখে মনে হচ্ছে, এর পিছনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার কাজ করছে। কারণ এখনও অনেকে টিকা নেওয়ার বিরুদ্ধে।’’