প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
রাজ্যে আংশিক লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল ১ জুলাই পর্যন্ত। তবে বেশ কিছু নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন রেস্তরাঁ, কাফে, হোটেল ও পানশালা খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। ৩০ শতাংশ কর্মচারীকে নিয়ে চালাতে হবে কাজ। ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আসন ভরা যাবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু মানুষ কি এই পরিস্থিতিতে বাইরে খেতে যাবেন? নাকি অনালাইন অর্ডারের উপরেই ভরসা রাখবেন? কী মনে করছেন রেস্তরাঁর মালিকেরা, খোঁজ নিল আনন্দবাজার ডিজিটাল।
চিনা খাবারের রেস্তরাঁ চেন ‘চাওম্যান’-এর কর্ণধার দেবাদিত্য চৌধুরী এ বিষয়ে খুবই আশাবাদী। তিনি বললেন, ‘‘রেস্তরাঁয় বসে খেতে চান, এমন মানুষের অভাব নেই। তাই রেস্তরাঁ খোলা থাকলে, চাহিদাও থাকবে। অনলাইনে অর্ডারও চলবে পাশাপাশি।’’ একই সুর শহরের অন্য এক চাইনিজ রেস্তরাঁ ‘নুড্ল উড্ল’-এর কর্ণধারের গলায়ও। ‘‘অনলাইন অর্ডারের পাশাপাশি আশা করছি আমরা রেস্তরাঁতেও ক্রেতাদের পাব। অনেকেরই এর মধ্যে টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে যাঁরা বাইরে খেতে ভালবাসেন, তাঁরা নিশ্চয়ই আসবেন। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। এটা খুবই জরুরি পদক্ষেপ। কর্মচারীরা এই লকডাউন পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়ছিলেন। তাঁরা এবার নতুন উদ্যমে কাজ করতে পারবেন,’’ বললেন রোশনী আদিত্য।
কিন্তু সাধারণ মানুষ কি খেতে বাইরে বেরোবেন?
সল্টলেকের বাসিন্দা পরিতোষ মুখোপাধ্যায়। পরিতোষবাবুর বয়স প্রায় ৭০। স্ত্রীও ৬০ পেরিয়েছেন। দু’জনেরই টিকার দু’টো ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু করোনার ভয়ে এখনও তাঁরা বাড়ি থেকে তেমন বেরোচ্ছেন না। পরিতোষবাবু বললেন, ‘‘আগে প্রায়ই আমি স্ত্রীর সঙ্গে নানা জায়গায় খেতে যেতাম। এখন আর সেই ভরসা পাচ্ছি না। তাই বেশির ভাগ অনলাইনেই অর্ডার করি।’’
বয়স্ক মানুষদের পক্ষে এখনও অনলাইন অর্ডার করাটাই শ্রেয় মনে করছেন নারুমেগ কাফের কর্ণধার মেঘালী লাহি়ড়ীও। তাঁর কথায়, ‘‘এই সময়ে করোনাবিধি মেনে চলাই সবচেয়ে জরুরি। দেখুন মানুষ বাঁচলে, তবে না আমাদের ব্যবসা বাঁচবে। আমরা নতুন নিয়ম মেনে কাফে খুলে রাখছি। যাঁরা খেতে আসবেন, তাঁদের ছাড়াও অনলাইনে বেশি অর্ডার পাব বলে আশা করছি।’’
মাঝেমাঝেই লকডাউন। দ্বিতীয় ঢেউয়ের আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই দেশে আসন্ন তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই এই লকডাউন পরিস্থিতিতে যে ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে, তা সকলেই বুঝে গিয়েছেন। কাফে-রেস্তরাঁর মালিকেরা কি তবে ব্যবসার ধরনে নতুনত্ব আনার চিন্তাভাবনা করছেন? দেবাদিত্যের মতে এখনও তেমন পরিস্থিতি হয়নি। তিনি বললেন, ‘‘কোভিড-পরিস্থিতি সাময়িক। এই বিপদ পার করতে পারলে আমাদের জন্য ভাল সময় অপেক্ষা করছে। হোটেল-রেস্তরাঁর ইন্ডাস্ট্রিতে একটা আর্থিক বুম হবে বলেই আমার ধারণা।’’ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মেঘালীরও। ‘‘টিকাকরণ হয়ে গেলে একটা নতুন ভারত তৈরি হবে। সেখানে ফের আমাদের ইন্ডাস্ট্রি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে বলে আশা রাখাছি,’’ বললেন তিনি।