পারাপার: রেল লাইন পেরোচ্ছে হাতিটি। ছবি রেলের সৌজন্যে।
ফের জঙ্গলপথে বুনো হাতির সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে পারল রেল।
শনিবার দুপুর ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ডুয়ার্সের সেবক ও বাগরাকোট স্টেশনের মাঝে মংপং রেঞ্জের জঙ্গল লাগোয়া এলাকাতে। আপ ঝাঝা ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক এ দিন সেবক স্টেশন পেরিয়ে তিস্তা নদী পার হবার পর জঙ্গলের পথে প্রবেশ করতেই বিরাট আকৃতির বুনো হাতিকে ট্রেন লাইনের ওপর আসতে দেখেন। চালক গৌতম পাল এবং সহকারী চালক এস নন্দী দ্রুত আপৎকালীন ব্রেক ব্যবহার করেন। হাতির থেকে ৫০ মিটার দূরেই দাঁড়িয়ে যায় ট্রেন। এর মিনিট পাঁচেক বাদে হাতি লাইন থেকে নেমে জঙ্গলে ঢুকে গেলে ফের ট্রেন চলতে শুরু করে। বাগরাকোট ষ্টেশনে এসে ঘটনার বিবরণ নথিভুক্ত করেন চালকেরা। এরপরই আলিপুরদুয়ার রেল বিভাগ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিষয়টি সরকারিভাবে জানানো হয়। রেলের আলিপুরদুয়ার রেল বিভাগের ডিআরএম কানভির এস জৈন বলেন, “আমাদের চালকদের তৎপরতার জন্যেই হাতিটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে, আমরা এর আগেও একাধিক বার এইভাবে ট্রেন দাঁড় করিয়ে হাতির প্রাণ রক্ষা করেছি।”
সম্প্রতি বানারহাট ও ক্যারন স্টেশনের মাঝে ট্রেনের ধাক্কায় এক মাকনা হাতির মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই রেলের ওপর বন ও পরিবেশপ্রেমীদের চাপ বাড়তে থাকে। চালকদের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়। এরপর মাত্র একমাসের মধ্যেই দুই বার ডুয়ার্স রুটে জঙ্গলের পথে হাতির সঙ্গে সংঘর্ষ এ ড়িয়ে কার্যত বার্তাই দিল রেল।
তবে রেলের এই হাতিকে বাঁচাবার কোনও ঘটনাই বন দফতরকে জানানো হয়নি। বন দফতরের গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “আমাদের এই বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। স্বভাবতই আমরা তাই কিছুই বলতে পারব না।” হাতি প্রাণে বাঁচলেও রেল ও বনের মধ্যে আজ অবধি কোনও সমন্বয় গড়ে ওঠেনি বরং শীতল যুদ্ধ চলছে বলেই দাবি করেন পরিবেশপ্রেমীরা। ওদলাবাড়ি এলাকার পরিবেশপ্রেমী সুজিত দাস বলেন, “আমরা বহু বছর ধরে রেল, বনের মধ্যে সমন্বয় চাই, কিন্তু এখানে নিজেদের মধ্যে কার্যত শীতল সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, যা পরবর্তীতে ক্ষতিকর হতে পারে।”