প্রস্তুত: মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগে নিরাপত্তা দার্জিলিঙে। নিজস্ব চিত্র
দার্জিলিং পাহাড়ে বৃষ্টি নতুন কিছু নয়। কিন্তু দিনভর মেঘ-বৃষ্টির ফাঁকে কালো পতাকা, মিছিল আর মন্ত্রীদের কনভয়ে এই দার্জিলিং পর্যটকদের কাছে কিছুটা হলেও অচেনা।
ম্যাল চৌরাস্তা থেকে দু’দিকে দু’টি পথই শেষ হয়েছে রাজভবনের সামনে। যাঁরা হাঁটতে হাঁটতে সে দিকে আসছেন, প্রথমেই চোখে পড়ছে উল্টো দিকে ভানুভবনে ছাতা মাথায় মোর্চার সভা। তার পরেই রাজভবনে বৃহস্পতিবারের বৈঠকের জন্য সাজ সাজ রব। কখনও কোনও মন্ত্রীর কনভয় এসে হাজির হচ্ছে সেখানে। কখনও নিরাপত্তা রক্ষীদের জটলা। এই বুঝি মুখ্যমন্ত্রী এসে পৌঁছবেন।
শুধু ম্যাল চৌরাস্তা নয়, তার আশপাশের অঞ্চলে সর্বত্রই ছিল এই ছবি। আর তাই বটানিক্যাল গার্ডেন, জিমখানা, চিড়িয়াখানা বা মহাকাল মন্দিরের মতো এগুলিও হয়ে দাঁড়িয়েছে পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। কেউ কেউ আবার বলেই ফেলছেন, কলকাতায় তো এ সব হরবখতই দেখি। দার্জিলিঙে এসেও নিস্তার নেই! সেই মন্ত্রী, কনভয়, মিটিং-মিছিল!
প্রাক বর্ষার বৃষ্টি নাকি শুরু হয়ে গিয়েছে পাহাড়ে। তার চোটে এমনিতেই গোটা ভিড় এসে জড়ো হয়েছে ম্যালে। সেখানে বেঞ্চিগুলো ফাঁকা নেই একটাও। খালি নেই ম্যালের এক ইঞ্চিও। পাশের সব দোকান, কেভেন্টার্স, গ্লেনারিস থেকে অক্সফোর্ড, সব জায়গাতেই পর্যটকের ভিড়। এর মধ্যেই এক দোকানিকে বলতে শোনা গেল, বৃহস্পতিবার তো ভিড় আরও বাড়বে। গুরুঙ্গ পাহাড়ের সব জায়গা থেকে লোক আনছেন! শোনা যাচ্ছে, তিরিশ-পঁয়তিরিশ হাজার লোক আসছে!
এত লোকের মধ্যে বেড়ানো কত দূর হবে, তা নিয়ে সংশয়ে পর্যটকেরাও। মুখ্যমন্ত্রী এই সময়ে পাহাড়ে আসায় কেউ কেউ ভুরু কুঁচকেছেন। কেউ আবার বলেছেন, উনি এলেন বলেই গুরুঙ্গরা বেশি কিছু করতে পারল না। এই পরিস্থিতিতে গাড়ির ভাড়া অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এক লপ্তে চিড়িয়াখানা আর হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট ঘুরে আসবেন বা মংপুর মতো আশপাশের কোথাও যাবেন মনে করলে ভালই রেস্তো লাগবে।
তাঁরা এখন মনে মনে ভাবছেন, ভালয় ভালয় বৃহস্পতিবারটা কাটুক। গুরুঙ্গদের জমায়েত থেকে যেন গোলমাল না ছড়ায়!