পঞ্চায়েত সদস্যদের উদ্দেশে ইংরেজবাজারের বিধায়কের বার্তা, ‘‘মানুষের পাশে থাকুন। মানুষের হয়ে কাজ করুন।’’ —নিজস্ব চিত্র।
‘দিদির দূত’ এবং ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি নিয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন শাসকদলের প্রতিনিধিরা। মন্ত্রী, বিধায়ক এবং নেতাদের সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই প্রেক্ষিতে মানুষের কাছে গিয়ে ভুল শুধরে নেওয়ার বার্তা দিলেন তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। যা নিয়ে বিজেপির কটাক্ষ, ‘বিলম্বিত বোধোদয়’ হয়েছে। তাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোট সামনে বলেই এই ‘আত্মশুদ্ধি’র কথা শোনাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে জনসংযোগ বাড়াতে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল। সেই কর্মসূচি নিয়ে সোমবার চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের অলিহন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতে যান ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন। ওই গ্রাম পঞ্চায়েত বর্তমানে তৃণমূলের দখলে। সেখানে পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন নীহাররঞ্জন। এলাকার উন্নয়নের প্রসঙ্গ থেকে মানুষের অভাব-অভিযোগ মন দিয়ে শোনেন বিধায়ক। এর পর দলীয় নেতৃত্বকে তিনি বলেন, ‘‘ভুল করে থাকলে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন।’’ অলিহন্ডা এবং চাঁচল, এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের উদ্দেশে বিধায়কের মন্তব্য, ‘‘ভুল করে থাকলে মানুষের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিন। মানুষের পাশে থাকুন। মানুষের হয়ে কাজ করুন। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমস্যা শুনুন। দরকার পড়লে ক্ষমা চেয়ে নিন।’’
এ নিয়ে অলিহন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আফসার আলি বলেন, ‘‘আমাদের বিধায়ক পঞ্চায়েত সদস্য এবং প্রধানকে নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে বিধায়ক নির্দেশ দিয়েছেন, পঞ্চায়েতের কোনও সদস্য বা প্রধান যেন তাঁদের সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের কাছে গিয়ে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নেন।’’ ওই তৃণমূল নেতার সংযুক্তি, ‘‘কাজ করতে গেলে মানুষ মাত্রই ভুল হয়। আমাদের যদি ভুল হয়ে থাকে তা হলে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব।’’
তৃণমূল বিধায়কের এমন নিদানের পর কটাক্ষ করেছে বিরোধী শিবির। মালদহ জেলা যুব মোর্চার সহ-সভাপতি সুমিত সরকার বলেন, ‘‘বিলম্বিত বোধোদয়। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই ক্ষমা চাইতে যাচ্ছেন। কিন্তু মানুষ এঁদের ক্ষমা করবেন না। সাধারণ মানুষ ‘দিদির দূত’কে ভূত বানিয়ে এলাকাছাড়া করছেন।’’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চাঁচলের কুশিদা এলাকায় ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে গিয়ে নীহাররঞ্জন নিজেও এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন। ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’য় দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। সোমবার অলিহন্ডা অঞ্চলে ওই একই কর্মসূচিতে যান নীহার। এ বার কোনও বিক্ষোভের মুখে না পড়লেও আগে থেকে ওই এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান এবং জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমা চেয়ে নিতে বলেন।