উত্তেজনা: দুই দলের দফায় দফায় সংঘর্ষের জেরে থমথমে ঘুঘুমারি। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
লোকসভা ভোটের পর রাজ্যে বিধানসভা উপনির্বাচনও মিটেছে। কিন্তু কোচবিহারে রাজনৈতিক গোলমাল থামার লক্ষণ নেই। শনিবার কোচবিহারের ঘুঘুমারি এলাকায় ফের নতুন করে বোমাবাজি হয়েছে।
কোচবিহার-দিনহাটা রাস্তায় বিজেপি অফিসের সামনে একটি বোমা ফাটানো হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এর জেরে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীদের অনেকে দোকানপাট বন্ধ করে দেন। বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা কিছু সময়ের জন্য কোচবিহার-দিনহাটা রাস্তা অবরোধ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। ওই ঘটনার জন্য তৃণমূল ও বিজেপি দু’শিবিরের নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
বিজেপির অভিযোগ, এ দিন দুপুরে এলাকায় মহামিছিলের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। ওই কর্মসূচি বানচাল করতে তৃণমূল মদতপুষ্ট লোকজন দলের অফিসের সামনে বোমাবাজি করেছে। দলের দুই সমর্থক জখম হয়েছেন বলেও দাবি করেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে দলের তরফে এদিন মহামিছিলের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। সেটা বানচাল করতেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে এসে ঘুঘুমারিতে দলের অফিসের সামনে বোমা ফাটায়। দলের কর্মীরা তাড়া করায় অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়।”
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, এলাকায় বিজেপিই সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এ দিন একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের সূচনা অনুষ্ঠান ছিল। তা বানচালেই ছক কষা হয়। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “সবটাই বিজেপির সাজানো ব্যাপার। বোমাবাজির রাজনীতি বিজেপির সংস্কৃতি। তদন্ত হলেই সব স্পষ্ট হবে।” কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, “বিজেপিই ঘুঘুমারিতে সন্ত্রাস করতে চাইছে। ওরা পুরো মিথ্যাচার করছে।”
শুক্রবার নিউ কোচবিহারগামী রাস্তার বাইশগুড়ি এলাকায় একটি প্রাথমিক স্কুলের সামনেও বোমা পড়ে, গুলি চলে বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশের তরফে ঘটনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, সমস্ত ক্ষেত্রেই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। নানা ঘটনায় অভিযুক্তদের অনেককেই গ্রেফতারও করা হয়েছে। তারপরেও অবশ্য বাসিন্দাদের একাংশের চিন্তা কমছে না।
বাসিন্দাদের একাংশ জানান, কিছুদিন আগেও ঘুঘুমারিতে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ হয়। বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। পরপর গোলমাল, বোমাবাজির অভিযোগের জেরে জেলায় হিংসার রাজনীতির আবহ ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়েরা। কিন্তু কেন এমন গোলমাল? রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, এলাকায় নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে মরিয়া দুই শিবির। তার জেরেই গোলমাল।