এই বাড়ি থেকেই পাওয়া যায় তরুণীর গলাকাটা দেহ। — নিজস্ব চিত্র।
দুই তরুণ-তরুণীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দেখছে শিলিগুড়ি পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের নিউ জলপাইগুড়ি থানার চতুরাগছ এলাকায় একটি বাড়ির শৌচাগার থেকে এক তরুণীর গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়। পরে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন চত্বরে একটি গাছ থেকে পাওয়া যায় এক তরুণের দেহ। ওই দু’টি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
মঙ্গলবার চতুরাগছ এলাকার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় রিয়া বিশ্বাস নামে এক তরুণীর দেহ। বাড়ির শৌচাগারে গলাকাটা অবস্থায় ছিল তাঁর দেহ। তাঁর স্বামীর নাম রোমিও বিশ্বাস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতি এক সময় নদিয়ায় থাকতেন। তবে গত দু’বছর ধরে তাঁরা রয়েছেন চতুরাগছে। রোমিও এবং রিয়ার বছর পাঁচেকের একটি সন্তান রয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার করে রিয়ার দেহ। তা পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
সুভাষ রায় নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘গতকাল রাতে ওদের বাচ্চাটি খুব কান্নাকাটি করছিল। বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনেই কয়েক জন রিয়ার বাড়িতে যায়। তখন ভোর প্রায় ৩টে। রিয়াকে না দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এর পর পুলিশ এসে শৌচাগার থেকে মহিলার গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে। রিয়া এবং রোমিওর মধ্যে মাঝে মাঝেই বচসা হত। ওরা নদিয়ার বাসিন্দা। রোমিও তার মা, বাবাকে আনতে নদিয়া গিয়েছে রবিবার। তার মাঝেই এমন কাণ্ড ঘটল!’’
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘তরুণীর মৃতদেহের পাশে এক যুবকের আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে। ওদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি ছিল। মহিলার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। কিছু দিন আগে প্রেমিক ফেসবুক লাইভে তার মানসিক অবসাদের কথা জানায়। সেই ভিডিয়ো আমাদের কাছে আছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এর বাইরে কিছু বলা সম্ভব নয়। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
এর মধ্যেই মঙ্গলবার ভোরের দিকে রেলপুলিশ এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন সংলগ্ন এলাকার একটি গাছ থেকে। এই যুবকই রিয়ার প্রেমিক কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, রিয়াকে খুন করে আত্মহত্যা করেছেন তাঁর প্রেমিক। যদিও গোটা বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার।