কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির। নিজস্ব চিত্র।
করোনার কারণে এ বছর বাতিল করা হল কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা। ১৯২৩ সালে কলেরা মহামারির প্রকোপে বন্ধ রাখা হয়েছিল মেলা। তবে ঠিক হয়েছে, এবার নিয়ম মেনে রাসযাত্রা হবে। কিন্তু রাসযাত্রাকে কেন্দ্র করে ১৫ দিন ধরে যে উৎসব ও মেলার আয়োজন হত, তা বন্ধ রাখছে কোচবিহার পুরসভা।
করোনার কথা মাথায় রেখে ১৫ দিনের রাস উৎসব মাত্র ৩ দিনেই সারা হবে। সব নিয়ম মেনেই মদনমোহন মন্দিরের রাসযাত্রার আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়েছে কোচবিহার পুরসভার তরফে। কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রের খবর, রাস পূর্ণিমা তিথিতে জেলাশাসক পবন কাদিয়ান রাশিচক্র ঘুরিয়ে মহারাজাদের কুলদেবতা মদনমোহন দেবের রাসযাত্রার শুভ সূচনা করবেন। তবে মন্দির চত্বরে যে যাত্রাপালা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, সেগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
কোচবিহার পৌরসভার প্রশাসক ভূষণ সিংহ জানিয়েছেন, চারিদিকে যে ভাবে করোনার প্রকোপ চলছে তাতে সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেলা হলে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। তবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের কথা ভেবে অল্প সংখ্যক কিছু স্টলের ব্যবস্থা করা হবে।
কোচবিহারের মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণের রাজত্বকালে ১৮১২ সালের কোচবিহারের রাজধানী ভেটাগুড়িতে শুরু হয় মদনমোহনের রাসমেলা। মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ ১৮৯০ সালে মদনমোহন মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। পরে বিশেষ কারণে মহারাজার নির্দেশে এই মেলা মন্দিরের কিছু দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রায় ২০০ বছরের পুরনো এই মেলায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা এবং নিম্ন আসাম, বাংলাদেশ, ভুটান থেকেও ব্যবসায়ীরা আসেন। ১৫ দিন ধরে চলে বেচা-কেনা। এই কয়েক দিনে প্রায় দেড়শো কোটি টাকার ব্যবসা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা। তিনি জানিয়েছেন, করোনার কারণে মেলা বাতিল হওয়ায় দোকানদার বা ব্যবসায়ীদের প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়তে হল। কিন্তু সবার স্বার্থে তা মেনে নিতে হবে।