বক্সার জঙ্গলে বাঘের সন্ধানে আকাশে ঘুরছে ড্রোন। সেই ড্রোন-ক্যামেরা থেকেই তোলা হয়েছে এই ছবি।
‘বাঘ শূন্য’ বক্সায় কয়েক বছর ধরেই অসম থেকে বাঘ আনার পরিকল্পনা চলছে। চারদিন আগে বক্সার ট্র্যাপ ক্যামেরায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ায় বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের এটাই সেরা সময়। রাজ্য সরকার অবশ্য এখনই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে নারাজ। বরং ক্যামেরায় ধরা পড়া বাঘটি যাতে নিরাপদে বক্সার জঙ্গলে থাকে, তা নিশ্চিত করতে মরিয়া তাঁরা।
গত শনিবার গভীর রাতে বক্সার জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ে। বন দফতর সূত্রের খবর, এর আগে ১৯৯৮ সালে শেষবার এখানে বাঘের দেখা মেলে। মাঝে ২৩ বছর সরাসরি বক্সায় বাঘের দেখা না মেলায় অনেক প্রশ্নও ওঠে। এই পরিস্থিতিতে অসম থেকে বক্সায় ছ’টি বাঘ আনার পরিকল্পনা হয়। যে জন্য বক্সার জঙ্গলে নতুন করে বাঘের বসবাসের পরিবেশ তৈরির কাজও শুরু হয়। বন দফতর সূত্রের খবর, সেই লক্ষ্যে শেষ কয়েক বছরে এইজঙ্গলে পাঁচ শতাধিক হরিণ ছাড়া হয়েছে। আগামী দিনে এখানে আরও হরিণ ছাড়ার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রেরখবর।
বনকর্তাদের একাংশের দাবি, বক্সায় বাঘের বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলেই এখানে একাধিক ট্র্যাপ ক্যামেরায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়েছে। তার পর থেকে প্রায় রোজই জঙ্গলের ভিতরে নতুন নতুন জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ মিলছে। এই পরিস্থিতিতে অসম থেকে বাঘ আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের এটাই সেরা সময় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে। এক সময়ে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ। তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, অসম থেকে বক্সায় বাঘ আনার সময় হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের উচিত বিষয়টি দ্রুত বিবেচনা করা।”
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, তেমনটা হলে বক্সায় বাঘের বসবাসের পরিবেশ কতটা তৈরি হয়েছে, সেটা আরও ভাল করে বোঝা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে অনেকে বক্সায় স্ত্রী বাঘ আনার পক্ষেও সাওয়াল করছেন। কারণ বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বক্সায় ট্র্যাপ ক্যামেরাটিতে পুরুষ রয়্যাল বেঙ্গলের ছবি ধরা পড়েছে। যদিও রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “অসম থেকে বাঘ আনার বিষয়টি এখন ভাবছি না। এখন আমাদের লক্ষ্য, বক্সায় যে বাঘটি দেখা গিয়েছে তাকে নিরাপদে রাখা।”