—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্য সরকারের ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের অধীনে জেলায় জেলায় ‘গাইড’ প্রশিক্ষণের জন্য রাজ্যে প্রথম বার উন্নত মানের কোর্স বা পাঠ্যক্রম তৈরির কাজ শুরু করেছে পর্যটন দফতর। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে গাইড তৈরির জন্য বিশেষ পাঠ্যক্রম তৈরি হচ্ছে।
নদী, হেরিটেজ এবং সংস্কৃতি, অ্যাডভেঞ্চার, বন্যপ্রাণ ও ইকো-টুরিজ়ম— আপাতত এই কয়েকটি ক্ষেত্রের জন্য পাঠ্যক্রম তৈরি হচ্ছে। ৯৬ ঘণ্টা বা দু’সপ্তাহের কোর্সের নতুন পাঠ্যক্রমে ‘উৎকর্ষ বাংলা’র মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
গত সোমবার বিষয়টি নিয়ে কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধীনে একটি রাজ্য স্তরের বৈঠকও হয়েছে। তাতে দফতরের সচিব অনুপ আগরওয়াল উপস্থিত ছিলেন। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে পাঠ্যক্রমের প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। বাছাই করা চারটি ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের দিয়েই পাঠ্যক্রম তৈরি করা হচ্ছে। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে পর্যটন দফতরের অধিকর্তা একটি নির্দেশিকাও জারি করেন। সুন্দরবন থেকে চন্দননগর, দার্জিলিং থেকে জলদাপাড়া, আগামী দিনে প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও প্রশিক্ষিত গাইডদের কাজের ব্যবস্থা করতে চলেছে পর্যটন দফতর।
পর্যটন দফতরের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘রাজ্যে টুরিস্ট গাইড সার্টিফিকেশন স্কিম ছিল। সেখানে পুরানো গাইডদের বিভিন্ন সময়ে সার্বিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। কিন্তু এ বার একেবারে নির্দিষ্ট চারটি ভাগ করে বিশেষভাবে কোর্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত গাইড তৈরি করা হবে। পর্যটন মানচিত্রে থাকা জেলায়-জেলায় এই ব্যবস্থা থাকবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্য ২৩টি জেলা মিলিয়ে গাইডের প্রশিক্ষণের জন্য নতুন করে ৩০ এপ্রিল অবধি ৩,১৫৪টি নতুন আবেদন জমা পড়েছে। এর বাইরে গাইডের কাজ করেছেন এমন ৩০৮ জন পুরনো গাইড নতুন করে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন। সবচেয়ে বেশি নতুন আবেদন রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদহ, নদিয়া, পুরুলিয়ার মতো জেলাগুলি থেকে। দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং থেকে আবেদনের সংখ্যাও ভাল। বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র বা জেলা মিলিয়ে ৫৪০ জন সক্রিয় গাইড কর্মরত। এই সংখ্যাটা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
দফতরের আধিকারিকেরা জানান, প্রতি জেলায় ইচ্ছুক প্রার্থীরা জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে পারেন। প্রশাসনের তৈরি তালিকা ধরে ‘উৎকর্ষ বাংলা’র অধীনে প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করতে শংসাপত্র দেওয়া হবে। সরকারি কোর্সে স্বীকৃত এবং শংসাপত্র পাওয়া গাইডেরা বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে কাজ করবেন। এঁদের আলাদা পরিচয়পত্রও থাকবে। দিল্লি, আগ্রা বা রাজস্থান, গুজরাতের মতো রাজ্যে বহু যুবক-যুবতী গাইডের কাজ করে সংসার চালান। টিকিট কেটে পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার সময় প্রশিক্ষিত গাইডদের নিতে হয়। এঁদের আলাদা টাকা দিতে হয়। সে মতো এ রাজ্যের চারটি ক্ষেত্রে পাঠ্যক্রম তৈরি করে পড়াশোনা করিয়ে গাইড তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিটি বিষয়ে সম্যক জ্ঞানের জন্য বিশেষ পাঠ্যক্রম তৈরি হচ্ছে।