প্রতীকী ছবি।
ঘরে বসে থাকলেও দ্বন্দ্ব কমেনি!
দলের অন্দরেই অভিযোগটা উঠছিল বেশ কিছুদিন থেকে। দলীয় সূত্রে খবর, বিষয়টি শোনার পরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পিকে। টিম পিকের পক্ষ থেকেও স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, যদি ফের ক্ষমতায় আসার ইচ্ছে থাকে তো একসঙ্গে নামতে হবে মাঠে। সেই চেষ্টাতেই বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেছিল কোচবিহার তৃণমূল। জেলা নেতাদের প্রত্যেকেই উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে।
দলীয় সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেও অনৈক্যের ছবিটাই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ থেকে দলের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কার্যত ক্ষোভের সুরেই বক্তব্য রাখেন বৈঠকে। শুধু দু’টি গোষ্ঠী নয়, এ দিন নেতারা একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। কারও ক্ষোভ ছিল দলেরই একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। কারও ক্ষোভ ছিল দলেরই আর এক নেতার বিরুদ্ধে। যদিও কেউই ওই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “সবাই একসঙ্গেই ময়দানে আছি। আগামীতে অঞ্চলে অঞ্চলে এমন বৈঠক হবে।”
করোনা আবহে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের অনেক নেতাই ঘরবন্দি হয়ে পড়েছিলেন। এমনটাই অভিযোগ বহু মানুষের। ময়দানে দেখা মিলছিল হাতে গোনা দুই-একজন নেতার। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বাদে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ এবং দলের কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়কে নিয়মিত বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে অন্য নেতা-বিধায়কেরা পিছিয়ে ছিলেন বলেই অভিযোগ। কেন তাঁরা পিছিয়ে ছিলেন, তা নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। তার মধ্যেই অভিযোগ ওঠে, দু’-একজন নেতা দলের কথা না বলে আত্মপ্রচারে মগ্ন। তা নিয়েও এ দিনের বৈঠকে সবাইকে সতর্ক করা হয়। যদিও এক নেতা বলেন, “এটা আত্মপ্রচার নয়, দলেরই প্রচার নানা ভাবে করা হয়।”
লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছে তৃণমূল হেরে যায়। তার পর থেকেই কার্যত তৃণমূলের সংগঠনে ধস নামে। তখন রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে সভাপতি করা হয় বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে। কার্যকরী সভাপতি করা হয় পার্থপ্রতিমকে। দল সূত্রে খবর, ওই দু’জনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বিরোধ রয়েছে। এ ছাড়াও দলের মধ্যে ব্লকে ব্লকে আলাদা আলাদা গোষ্ঠী রয়েছে বলেও অভিযোগ।
এই অবস্থায় টিম পিকে সমীক্ষা করে সবাইকে সতর্ক করে দেয়। করোনা প্রকোপে কিছুদিনের জন্য রাজনীতি থেকে প্রায় প্রত্যেকেই দূরে সরে যান। ফের ধীরে ধীরে সংগঠিত হতে শুরু করেছে তৃণমূল ও বিরোধীরা। এই অবস্থায় নতুন করে ফের তৃণমূলের দ্বন্দ্ব সামনে আসতে শুরু করেছে। সে সব দূরে সরিয়ে দিয়ে টিম পিকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের নির্দেশ দেয়। রবীন্দ্রনাথ বা উদয়ন কেউই ওই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁদের কথায়, “দলের নির্দেশ মেনেই সংগঠনের কাজ শুরু হবে।”