নির্যাতিতা শিক্ষিকার কথায়, ‘‘চুরি করেছিল ছাত্রটি। তাই আমরা শাসন করেছিলাম। আমি ছাত্রটিকে মারধরও করিনি।’’ —নিজস্ব চিত্র।
ক্লাসঘর তখন গমগম করছে। বিনা বাক্যব্যয়ে হঠাৎ সেই ঘরে ঢুকে পড়লেন এক অভিভাবক। এর পর শিক্ষিকার চুলির মুঠি ধরে টেনে নিয়ে স্কুল চত্বরে তাঁর গালে থাপ্পড় মারার অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ওই শিক্ষিকাকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করারও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থল মালদহের মানিকচকের নাজিরপুর পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার স্কুলের অফিস ঘরের ড্রয়ার থেকে চুরি যায় প্রায় ৭০০ টাকা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সন্দেহ করেন স্কুলেরই কেউ ওই টাকা চুরি করেছে। শুরু হয় পডুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ। তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে চেপে ধরতে সে চুরির কথা স্বীকার করে। এর পর তাকে শাসন করেছিলেন শিক্ষকরা। কেন ছেলেকে মারধর করা হল, তাই নিয়ে ওই ছাত্রের মা এবং এলাকার কয়েক জন মহিলা বুধবার স্কুল ঢুকে দেবপ্রিয়া রায় নামে এক শিক্ষিকাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। শিক্ষিকা বলেন, ‘‘আমার চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মারা হয়।’’
বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ স্কুল চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, প্রথমে অভিভাবকরা চড়াও হন স্কুলের টিআইসি চন্দন মিত্রের উপর। তাঁকে অকথ্য গালিগালাজ করতে শুরু করেন। ওই ঘটনার ভিডিয়ো করছিলেন সহ-শিক্ষিকা দেবপ্রিয়া। তাঁর হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। দু’জন মহিলা তাঁর চুলের মুঠি ধরে ক্লাসরুম থেকে বের করে নিয়ে যান। এমনকি শিক্ষিকার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরে ঘটনার খবর পেয়ে ওই স্কুলে যায় মানিকচক থানার পুলিশ।
নির্যাতিতা শিক্ষিকার কথায়, ‘‘চুরি করেছিল ছাত্রটি। তাই আমরা শাসন করেছিলাম। আমি ছাত্রটিকে মারধরও করিনি। আমাকে আমার সমস্ত ছাত্রছাত্রীর সামনে চুলের মুঠি ধরে মারধর করলেন ছাত্রের মা এবং স্থানীয় একজন মহিলা। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’’ তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন।
অন্য দিকে, ওই ছাত্রের মায়ের দাবি, তিনি শিক্ষিকাকে মারধর করেননি। শিক্ষিকার গায়ে হাত তুলেছেন অন্য এক মহিলা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।