খুশিতে: রং খেলায় মেতেছেন শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে সাত বছরের অপেক্ষা শেষে বুধবার শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার উপস্থিতিতে খুলল কালচিনি ব্লকের মধু চা বাগান। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বন্ধ হয়ে যায় বাগান। এ দিন ফ্যাক্টরি গেটে ফিতে কেটে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভাবে বাগান খুলে দেন মন্ত্রী। গত কয়েক বছর ধরে বকেয়া থাকা বোনাসও দেওয়া হয় শ্রমিকদের। বাগান খোলার খুশিতে শ্রমিকেরা রং খেলায় মেতে ওঠেন। দীর্ঘ সাত বছর এই অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। এর মধ্যে কারও মৃত্যু হয়েছে, তেউ কাজের খোঁজে ভিন্রাজ্যে পারি দিয়েছেন। বাগান খোলায় ফিরতে শুরু করেছেন বাইরে যাওয়া শ্রমিকদের অনেকে।
এ দিন শ্রমমন্ত্রী-সহ ছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বারাইক, কালচিনি ব্লক সভাপতি বীরেন্দ্র বারা, আলিপুরদুয়ার জেলার তৃণমূল চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী, এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী, জেডিএ চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। তবে অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি কালচিনি ব্লক বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামাকে। এ দিকে, বাগান খুললেও প্রবেশের মুখে তৃণমূলের দলীয় পতাকা নিয়ে বিতর্ক ছড়ায়। সরকারি অনুষ্ঠানে দলীয় পতাকা লাগানোয় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশাল লামা। বিশাল বলেন, ‘‘আমার আসার কথা ছিল। জানতে পারি তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে এটিকে দলীয় অনুষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। তাই যাওয়াটা ঠিক মনে হল না।’’ কালচিনি ব্লক সভাপতি ও তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র বারা ওঁরাও অবশ্য বলেন, ‘‘সব বাগানেই এমন পতাকা লাগানো রয়েছে। কেউ নতুন করে তা লাগায়নি।’’
বাগানের শ্রমিক জোৎস্না খারিয়া জানান, দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছিলাম, অবশেষে বাগান খুললো। শ্রমিক নেতা ইজদর খারিয়া বলেন, ‘‘এতদিন এই দিনটারই অপেক্ষায় ছিলাম। বাগানকে নতুন জীবন দেওয়ার জন্য সমস্ত দলীয় নেতা, সরকারি আধিকারিক ও মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’
মধু বাগানের ম্যানেজার সোমনাথ নন্দী বলেন, ‘‘আশা করছি শ্রমিকদের সহায়তায় মধু বাগানকে পুরোনো গরিমায় ফিরিয়ে আনতে পারবো।’’'
শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না এ দিন বলেন, ‘‘দীর্ঘ সাড়ে সাত বছরের অপেক্ষা শেষে মধু চা বাগান খুলল। এর পরে উত্তরবঙ্গের অন্য চা বাগান, যেগুলি বন্ধ আছে, সেগুলি আমরা খোলার চেষ্টা চালাচ্ছি।’’ অন্যদিকে বাগান খোলার সময় যে চুক্তি হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল বাগানে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকেরা আগামী তিন বছর কোনও গ্রাচুইটি, পিএফ পাবেন না। নিয়ম অনুযায়ী পরিবারের একজন যে বাগানে কাজ পাওয়ার কথা, তা-ও পাবেন না। এ বিষয়ে মন্ত্রী জানান, আজ সবে বাগান খুলেছে, আমরা পরবর্তীতে এ বিষয়ে চিন্তা করবো। এ বিষয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান কালচিনি ব্লক সভাপতি ও তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র বারা ওঁরাও-ও।