ছবি সংগৃহীত।
গুঁড়ো চা পাতা বিক্রি করতে হবে নিলামের মাধ্যমেই, সিদ্ধান্ত নিয়েছে চা পর্ষদ। গুঁড়ো চা পাতার নিলাম দেখাশোনা করতে একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছে চা বিষয়ক দেশের শীর্ষ কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থা চা পর্ষদ।
এতদিন গুঁড়ো পাতা নিলাম সংক্রান্ত নির্দেশিকা ছিল না। ইচ্ছে মতো খোলা বাজারে গুঁড়ো পাতা বিক্রি করা হত। তার ফলে, এর দামেও কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কম দামে কিনে ইচ্ছে মতো দরে গুঁড়ো পাতা বিক্রির প্রবণতা বাড়ছিল। তার ফলে, চা পাতার সার্বিক দর মার খাচ্ছিল। মুনাফা ঘরে তুলছিল মধ্যবর্তী বিপণন সংস্থা। চা উৎপাদকদের কাছে লাভের অর্থ পৌঁছত না বলে দাবি। চা পর্ষদের নতুন নিয়মে এ বার গুঁড়ো চায়ের একশো শতাংশ বিক্রি করতে হবে নিলামের মাধ্যমে। চা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রভাতকমল বেজবড়ুয়াকে মাথায় রেখে গড়া হয়েছে কমিটি।
চা পর্ষদ সূত্রের খবর, আগামী এপ্রিল থেকে গুঁড়ো চা পাতা নিলাম হবে দেশের সব কেন্দ্রে। এতদিন গুঁড়ো চা পাতাকে বিপণনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই ধর্তব্যের মধ্যে আনতেন না। যদিও ওয়াকিবহালদের দাবি, গুঁড়ো চা পাতা ঘিরে একটি নিজস্ব অর্থনৈতিক বৃত্ত তৈরি হয়েছিল, যাতে কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। চা পরিচালক সংগঠনের এক কর্তা বলেন, “সকলের লক্ষ্য থাকত ভাল, অর্থাৎ, বড় দানার চা কেনার। সে চায়ের দাম কেমন ওঠা-পড়া করছে তাতেই নজর থাকত বেশি। কিন্তু অলক্ষ্যে গুঁড়ো চা পাতা বিক্রি হয়ে যেত জলের দামে। কিছু সংস্থা সে পাতার গুঁড়ো জলের দরে কিনে বড় দানার চায়ের সঙ্গে অথবা নানা ভাবে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করত। গুঁড়ো পাতা নিলামে এলে চায়ের দরও বাড়বে।”
‘সিটিসি’ চা তৈরি করতে মেশিনে কিছু গুঁড়ো জমা হয়, সেগুলিই গুঁড়ো চা পাতা বলে বিক্রি হয়। স্বাদে এবং গন্ধে এর কোনও খামতি থাকে না। গুঁড়ো চা পাতা নিলামের জন্য গড়া কমিটির চেয়ারম্যান প্রভাতকমল বেজবড়ুয়া বলেন, “এর ফলে, চায়ের দাম সামগ্রিক ভাবে বাড়বে। চায়ের জন্য ভালই হবে।”
উত্তর ভারতে যত চা উৎপাদন হয় তার ১৮ থেকে ১৯ শতাংশ হল গুঁড়ো চা। যা এত দিন নিলামের বাইরে ছিল। এই বড় অংশের চা নিলামে চলে এলে, নিলামের চায়ের দর অবশ্যই বাড়বে বলে মনে করছে চা শিল্পমহল। গুঁড়ো চা নিলামের অনুমতি মেলায় আশায় বুক বাঁধছে জলপাইগুড়ি নিলাম কেন্দ্রও। দীর্ঘদিন ধরে পাতার জোগানের অভাবে এই নিলাম কেন্দ্র বন্ধ। নিলাম শুরু করতে গুঁড়ো চা নিলামের অনুমতি চেয়ে একাধিক বার প্রস্তাব পাঠিয়েছে এই কেন্দ্র। এ বার চা পর্ষদ নিজদেই গুঁড়ো চায়ের একশো শতাংশ নিলামের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের পরিচালন কমিটির অন্যতম সদস্য বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে নিলাম শুরু করা যাবে এ বার। আগামী এপ্রিলেই মিলতে পারে সুখবর।”