ফাইল চিত্র।
এক-আধ দিন নয়। নিয়মিত সুতপা চৌধুরীকে হুমকি দিত সুশান্ত চৌধুরী, এখন বলছেন সুতপার বাবা-মা। শুধু সুতপাই নন, তাঁর মা পাপুলিও বাদ যেতেন না। এতটাই অতিষ্ট হয়ে উঠেছিলেন সুতপা যে, তিনি নিয়মিত তাঁর বাবা-মাকে বলতেন সুশান্তের বিরুদ্ধে পুলিশে নালিশ জানাতে। এই অভিযোগই এখন করছেন সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়ি থেকে ইংরেজবাজার শহরে এসেছিলেন তাঁরা। তখনই কথায় কথায় এই তথ্য জানান স্বাধীন। পেশায় স্কুল শিক্ষক স্বাধীন কিন্তু মেয়ের কথা মেনে তখনই পুলিশে যাননি। তিনি এ দিন জানান, তখন তাঁরা ভয় পাচ্ছিলেন যে, একেই সুশান্তের বাবা পুলিশে কাজ করেন, তার উপরে ওকে যদি পুলিশে দেওয়া হয়, জামিন পেয়ে এসে উল্টে তাঁদের উপরে চড়াও হবে সে। তবে এত সাবধান হয়েও শেষ রক্ষা হল না, মানছেন স্বাধীন-পাপুলি। সুতপাকে নৃশংস ভাবে খুনই করা হল। এখন স্বাধীন বলছেন, শুধু সুশান্তই নয়, মেয়ের যে বান্ধবী সুশান্তকে নানা ভাবে সহযোগিতা করেছে, তাঁরও শাস্তি চাই।
সোমবার ভরসন্ধ্যায় বহরমপুরে সুতপা যখন খুন হন, সে সময় স্বাধীন, পাপুলি ও ছোট মেয়ে প্রিয়সী মালদহের ইংরেজবাজার শহরের এয়ারভিউ কমপ্লেক্সের বাড়িতেই ছিলেন। খবর শুনে রাতেই তাঁরা তড়িঘড়ি বেরিয়ে যান বহরমপুরে। সেখান থেকে সোজা বৈষ্ণবনগরের রাজনগরে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। কিছু কাজ বাকি থাকায় বৃহস্পতিবার সকালে সেখান থেকে তিন জনই শহরের বাড়িতে আসেন।
পাপুলির কথায়, ‘‘মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে ঘরে রান্না করা খাবার-দাবার পড়েছিল। এ সব সাফসুতরো করতেই আসা।’’ ওই বাড়িতে বসেই স্বাধীন বলতে থাকেন, ‘‘সোনাইকে (সুতপার ডাকনাম) সুশান্ত ফোনে খুবই উত্ত্যক্ত করত। প্রাণে মারার হুমকি দিত। সোনাইয়ের মাকেও হুমকি দিত। আমাকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। একটা সময় সোনাই আমাকে বলতে বাধ্য হয়েছিল, কেন আমরা পুলিশে যাচ্ছি না?’’ তিনি বলেন, ‘‘সোনাইয়ের কথা শুনে সে দিন যদি পুলিশে যেতাম, তবে হয়তো এই পরিস্থিতি দেখতে হত না।’’
এখন স্বাধীনের দাবি, ‘‘মেয়ে চলে গেল। আমরা সুশান্তর ফাঁসি চাই।’’ স্বাধীন আরও বলেন, ‘‘মেয়ের যে সহপাঠী ছাত্রীটি সুশান্তকে নানা ভাবে সহযোগিতা করেছে, আমরা তাঁরও শাস্তি চাই। কারণ সোনাইয়ের ব্যাপারে সব তথ্য সেই ছাত্রীই সুশান্তকে দিত। পুলিশ তদন্ত করলেই সব বেরিয়ে আসবে।’’