Stubble Burning

খেতে আগুনে বাড়ছে বিপদ

কোচবিহার জেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখনও ওই ‘নাড়া’ পোড়ানোর চিত্র সামনে আসে। তা সে মাথাভাঙার নয়ারহাট, ভবেরহাট হোক বা তুফানগঞ্জের শালবাড়ি ও মহিষকুচি গ্রাম।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৮
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

‘নাড়া’ (ধান বা গম কাটার পরে খেতে পড়ে থাকা গাছের গোড়া) পচানোর জন্য সরকারি ক্যাপসুলের দেখা মেলেনি কখনও। কষ্ট করে দিনের পর দিন খেটে ‘নাড়া’ তুলে গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হত। সে কাজের জন্য সময় অনেক প্রয়োজন। তাই বেশিরভাগ সময়েই খেতের ‘নাড়া’ খেতেই পোড়াতে দেখা যায়। চাষিদের একটা বড় অংশের ধারণা, তাতে জমিরই লাভ হল। জমি পরিষ্কার হওয়ার সঙ্গে উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পেল। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তাতে ফল হচ্ছে উল্টো। খেতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের।

Advertisement

কোচবিহার জেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখনও ওই ‘নাড়া’ পোড়ানোর চিত্র সামনে আসে। তা সে মাথাভাঙার নয়ারহাট, ভবেরহাট হোক বা তুফানগঞ্জের শালবাড়ি ও মহিষকুচি গ্রাম। সেই প্রবণতা বন্ধে কৃষি দফতরের তরফে শুরু হয়েছে সচেতনতা-প্রচার। কোচবিহার জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি ট্যাবলো দেড় মাস ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করবে। ভাওয়াইয়া গানের মাধ্যমে প্রচার করা হবে।’’

কোচবিহার জেলায় দু’লক্ষ ১১ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান চাষ হয়। এখন আমন ধান কাটার মরসুম চলছে। কোথাও ধান কাটা শেষ হয়েছে, কোথাও ধান কাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কৃষকেরা অনেকেই জানিয়েছেন, ধান কাটার পরে, আলু, ভুট্টা বা অন্য কোনও চাষের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। সেই কাজে হাতে অল্প সময় থাকে। দশ থেকে পনেরো দিনের মধ্যে জমিতে নতুন চাষ শুরু করতে চান কৃষকরা। সে জন্য দ্রুত ‘নাড়া’ সরিয়ে দিতে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার রাস্তা নেন অনেকেই।

Advertisement

দফতরের দাবি, উত্তরবঙ্গ বা কোচবিহারে সেই প্রবণতা কিছুটা কম। দিল্লি, হরিয়ানা বা পঞ্জাবের মতো অবস্থা এই অঞ্চলে কখনও হয়নি। পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, এক একর জমিতে ধান চাষ করলে দশ কুইন্টালের উপরে নাড়া হয়। সে নাড়া পুড়িয়ে দিলে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, মিথেন গ্যাস তৈরি হয়। সে সব ক্ষতিকারক গ্যাস পরিবেশের প্রচণ্ড ক্ষতি করে।

পরিবেশবিদদের বক্তব্য, শুধু পরিবেশের ক্ষতি নয়, নাড়া পুড়িয়ে দেওয়ার সময় যে তাপ তৈরি হয় তাতে জমির কীট ও ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। জমির উর্বরতাও নষ্ট হয়। কৃষি দফতর জানিয়েছে, ভাওয়াইয়া গান, ট্যাবলোর হোর্ডিং ছাড়াও, পথনাটিকা, লিফলেট বিলি, মিছিলের মতো নানা কর্মসূচি চলছে। প্রচারে বলা হচ্ছে— ‘নাড়াই সম্পদ’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement