ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে ভোট দেবেন ওই বিধানসভা এলাকার পাঁচটি চা বাগানে মানুষও। বানারহাটের গেন্দাপাড়া চা বাগানে। ছবি দীপঙ্কর ঘটক
রাজবংশী-প্রধান ধূপগুড়ির উপনির্বাচনের রায় কোন দিকে যাবে? তাতেই নজর কোচবিহারের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের। কারণ, কোচবিহারেও বড় অংশের ভোটার রাজবংশী। আগামী লোকসভা ভোটে তাঁদের ভোটের গুরুত্ব অনেক। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ‘‘আগামী দিনে কোচবিহার কোন পথে হাঁটবে, তা স্পষ্ট হবে ধূপগুড়ির নির্বাচনেই।’’
শাসক থেকে বিরোধী— সব রাজনৈতিক দলের নেতারা অবশ্য এ নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করছেন। তৃণমূলের রাজবংশী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ, পার্থপ্রতিম রায়। গিরীন্দ্রনাথ দলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান, পার্থপ্রতিম মুখপাত্র।
পার্থপ্রতিমের দাবি, ‘‘উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ বিজেপির পক্ষে রয়েছেন বলে যে কথা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, তা এ বার ধূপগুড়ির উপনির্বাচনের ভোটে ভাঙবে। আগামী দিনে শুধু কোচবিহার নয়, উত্তরবঙ্গের সব লোকসভা আসনে জয়ী হবে তৃণমূলই।’’ গিরীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের মানুষ রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গেই রয়েছেন। তা পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। উপনির্বাচনেও হবে, লোকসভাতেও প্রমাণিত হবে। সবই সময়ের অপেক্ষা।’’
বিজেপি অবশ্য দাবি করেছে, ধূপগুড়িতে এ বারও জয়ী হবে বিজেপি। গত বিধানসভায় ওই আসনে বিজেপিই জয়ী হয়েছিল। বিধায়কের মৃত্যু হওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, ওই আসন ধরে রাখা বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। গ্রেটার কোচবিহার নেতা অনন্ত রায়কে কয়েক দিন আগেই রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত করেছে। রাজবংশী সম্প্রদায়ের ভোটের দিকে নজর রেখে তাঁকেও ধূপগুড়িতে প্রচারে নিয়ে যায় বিজেপি।
বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র মন্তব্য, ‘‘রাজবংশী সম্প্রদায় তো বটেই, উত্তরবঙ্গের মানুষ বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। তা একাধিক বার প্রমাণিত হয়েছে। এ বারও প্রমাণিত হবে। উপনির্বাচনে জয় তো হবেই। লোকসভায় উত্তরবঙ্গের কোথাও জায়গা পাবে না তৃণমূল।’’
বিজেপি বিধায়ক বরেন বর্মণ অবশ্য বলেন, ‘‘উপনির্বাচন আর লোকসভা নির্বাচন এক নয়। লোকসভা ভোট হবে দেশের কথা ভেবে। সেখানে আরও বিপুল ভাবে জয় আসবে।’’ বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘উপনির্বাচনের ফলে অনেক কিছুই প্রমাণ হবে। সেই অপেক্ষাতেই আমরা আছি।’’
বামেরা অবশ্য দাবি করেছে, এ বারে জাত-ধর্মের রাজনীতির জবাব দেবে মানুষ। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়
বলেন, ‘‘দুই দলই জাত-ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। মানুষের সমস্যা, অধিকার নিয়ে কারও কোনও কথা নেই।
মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, জবাব দেওয়ার জন্য।’’