গোলমাল: শিক্ষিকার সঙ্গে বচসা বিধায়কের। নিজস্ব চিত্র।
আত্মহত্যা করলে দায় কে নেবে, ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে স্কুলের শিক্ষিকাকে এমনই প্রশ্ন করে বিতর্কে জড়ালেন হবিবপুরের বিজেপির বিধায়ক জোয়েল মুর্মু। বিধায়ক ‘আত্মহত্যার প্ররোচনা দিচ্ছেন’ বলে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন শিক্ষিকাও। বিধায়ক-শিক্ষিকার বাদানুবাদের পাশাপাশি পাশ করানোর দাবিতে আন্দোলনকারী উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রীদের উপরে মৃদু লাঠি চালাবার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীতে।
হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডী আরএনরায় হাই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৭৬ জন। পাশ করেছেন ৭৯ জন। স্কুলের সর্বচ্চ নম্বর ৩৬৫। পাশ করতে পারেননি স্কুলেরই প্রায় অর্ধেক ছাত্রী। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পড়ুয়াদের নম্বরের সঙ্গে বোর্ডের নম্বরের কোনও মিল নেই। এক দশক আগে উচ্চ মাধ্যমিকে পঠন-পাঠন শুরু হলেও ফলাফল বরাবরই ভাল, দাবি কর্তৃপক্ষের। গতবারে ১৩৭ জনের মধ্যে পাশ করেছিলেন ১১৫জন। সর্বচ্চ নম্বর ছিল ৪৫২। এবারে পরীক্ষা না হলেও ফেল প্রায় অর্ধেক। তাতেই তৈরি হয়েছে ক্ষোভ।
এদিন সকাল থেকে স্কুলের শিক্ষিকাদের তালাবন্দি করে বিক্ষোভ দেখায় আন্দোলনকারীরা। পরে স্কুলের সামনে মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভে আটকে পড়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে আন্দোলনে শামিল হন হবিবপুরেরই বিজেপি বিধায়ক জোয়েল মুর্মু। পড়ুয়ারা আত্মহত্যা করলে তার দায় কে নেবে বলে তিনি প্রশ্ন করেন স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ঝুম্পা মজুমদারকে। বিধায়কের কথা শুনে হাততালি দিয়ে হইচই করে পড়ুয়ারা।
বিধায়ক এমন কথা বলতে পারেন না বলে পাল্টা দাবি করেন ঝুম্পা। তিনি বলেন, “বিধায়কের মতো জনপ্রতিনিধির মুখে আত্মহত্যার কথা মানায় না। বিধায়ক ছাত্রীদের সামনে আত্মহত্যার কথা বলে ঠিক করেননি।” পড়ুয়াদের সমস্যা নিয়ে শিলিগুড়িতে কাউন্সিলের অফিসে যাবেন বলে জানান তিনি। জয়েল বলেন, “বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলন করছেন ছাত্রীরা। সেই উদ্দেশ্যে আত্মহত্যার কথা বলা হয়েছে। এখানে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই।”
এর পরে ফের পথ অবরোধ করেন পড়ুয়ারা। অভিযোগ, অবরোধ তুলতে গিয়ে লাঠি চালায় পুলিশ। এমনকি আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের অভিভাবকদেরও মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। যদিও লাঠি চালাবার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা পুলিশ কর্তারা।