প্রতীকী ছবি।
ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট তথা আব্বাস সিদ্দিকিকে উত্তরবঙ্গে আসন ছাড়ার প্রশ্নে বাম-কংগ্রেসের নিচুতলাতেও অসন্তোষ ছড়াচ্ছে। আইএসএফের কোনও সংগঠন বা প্রভাব এখানে নেই বলে জোট নেতাদের একাংশেরই দাবি। তাঁদের বক্তব্য, মালদহের সুজাপুর বা মোথাবাড়ি কেন্দ্রে সিদ্দিকির কিছু সমর্থন-ভিত্তি রয়েছে। রাজনৈতিক সংগঠন বলে আইএসএফের কোনও ব্যাপার নেই। এই পরিস্থিতিতে মালদহ বা উত্তর দিনাজপুর জেলায় তারা আসন পেলে কংগ্রেস বা বামেদের নিচুতলার লোকজন তা মেনে নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে গোঁজ প্রার্থীর সম্ভাবনা বাড়বে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
এমনিতেই আব্বাসের প্রভাব উত্তরবঙ্গে নেই দাবি করে তাদের প্রচারে তাঁকে ডাকার প্রয়োজনআছে বলে মনেই করছেন না বিদায়ী বিধায়ক সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য বা ফরওয়ার্ড ব্লকের আলি ইমরান রমজরা। এখন সংযুক্ত মোর্চার জোটে আইএসএফ মালদহে আসন চাইছে, এমন খবরে স্থানীয় কংগ্রেস তো বটেই বামেদের অনেকেই চিন্তিত। কেন ওই আসন ছাড়া হবে তা নিয়ে দলের অন্দরেও চর্চা চলছে বলে কংগ্রেস এবং সিপিএমের একটি সূত্রেই খবর। এলাকায় এর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। তবে এ দিন মানিকচকের কংগ্রেস বিধায়ক মোত্তাকিন আলম বলেন, ‘‘মালদহের কোনও আসন আর দেওয়ার ব্যাপার নেই বলেই শুনেছি। জোটের আলোচনায় না কি সেটাই ঠিক হয়েছে। সুজারপুর, মোথাবাড়ি বরাবর কংগ্রেসের ঘাঁটি।’’ এখন মোর্চার ঘোষণার অপেক্ষায় তাঁরা।
সুজাপুরকে এক সময় গনি খানের গড় বলা হত। গনি খান এবং মৌসম নুরের মা রুবি নুর এখান থেকে দাঁড়াতেন কংগ্রেসের টিকিটে। মোথাবাড়িও কংগ্রেসের ঘাঁটি। ২০১৬ সালে কংগ্রেস সুজাপুর থেকে ৪৭ হাজারের মতো ভোটে এবং মোথাবাড়ি থেকে ৩৮ হাজার ভোটে জিতেছিল তৃণমূল থেকে। শেষ লোকসভায় সুজাপুর কেন্দ্র থেকে ৩০ হাজার ভোটে, মোথাবাড়িতে ১৮ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়েছিল কংগ্রেস। তাও ওই দুটি আসন ছেড়ে দিতে হলে নিচুতলার কর্মীরা তা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারবেন না বলে জানান মোত্তাকিন আলম।
একই ভাবে উত্তর দিনাজপুরে ইসলামপুরের আসন নিয়েও আলোচনা চলছিল বলে বাম নেতারা জানিয়েছিলেন। যা নিয়ে দলের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে। কর্মী-সমর্থকেরা বলছেন গত বিধানসভার কথা। ইসলামপুর আসনটি বামেরা ছেড়েছিল বিহারের নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-কে। যা বাম ও কংগ্রেস নিচুতলার কর্মীরা মেনে নেননি। পাল্টা কংগ্রেসের গোঁজ প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। জোট প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়। আখেরে এক সময়য়ের লাল দুর্গে সাংগঠনিক শক্তি আলগা হতে থাকে। ইসলামপুরের সংখ্যালঘুদের একাংশের বক্তব্য, পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকিকে ধর্মগুরু হিসাবে তাঁরা শ্রদ্ধা করেন ঠিকই। কিন্তু তার সঙ্গে রাজনীতি মেলালে তো বিপদ।