ঘুমপাড়ানি নিয়মকানুন। বিশদে জেনে নিন। ছবি:ফ্রিপিক।
টিক টিক করে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলে। তবু দু’চোখের পাতা এক হয় না অনেকেরই। মধ্যরাত পেরিয়ে গিয়ে রাত গভীর হলেও যখন ঘুম আসব-আসব করেও আসে না, তখন সময় কাটাতে কেউ কেউ চোখ রাখেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। এই করতে করতেই রাত ভোর হয়।
চিকিৎসকেরা বলেন, সুস্থ থাকতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। কিন্তু এত ক্ষণ ঘুমের সময়ই বা কোথায় মেলে? যদি বা সময় থাকে, ঘুম আসতে চায় না তখন।
ঘুম আনতেই নেটমাধ্যমে চর্চায় ১০-৩-২-১-০ নিয়ম। কী সেটি? মানলেই কি ঘুমপাড়ানি গানের মতো কাজ হবে? দু’চোখে ঘুম জড়িয়ে আসবে?
আমেরিকান শিশুরোগ চিকিৎসক এবং স্পোর্টস মেডিসিন সংক্রান্ত চর্চাকারী জেস অ্যান্ড্রেড ২০২১ সালে এই নিয়মটির কথা বলেন। পরবর্তী কালে তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে চর্চা শুরু হয়। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ঘুম পাড়ানোর নয়া পন্থা।
বিষয়টি কী?
এই নিয়ম বলছে ঘুমোতে যাওয়ার ১০ ঘণ্টা আগে ক্যাফিন-যুক্ত পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে। ২০২৩ সালে ‘সায়েন্সডিরেক্ট’ জার্নালে ‘স্লিপ মেডিসিন রিভিউ’ শীর্ষক সমীক্ষা প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, ঘুমের আগে ক্যাফিন খেলে মোট ঘুমের সময় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত হ্রাস পায়।
নিয়মের দ্বিতীয় ধাপে ৩-এর অর্থ ভারী খাবার অর্থাৎ রাতের খাবারটি ঘুমোনোর অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে খেয়ে ফেলতে হবে। ৩ ঘণ্টা আগে অ্যালকোহল খাওয়াতেও ইতি টানতে হবে। না হলেই ঘুম আসতে অসুবিধা হতে পারে। বেশি রাতে ভারী খাবার খেলেও হজমের সমস্যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
পরবর্তী ধাপ হল ২। এই সংখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, ঘুমোনোর ২ ঘণ্টা আগে সমস্ত কাজকর্ম বিশেষত মাথা ঘামানোর কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। চিকিৎসকেরা বলছেন, মানসিক চাপ থাকলে অনেক সময় কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে হরমোনটি।
নিয়মে ১-এর অর্থ হল ঘুমোতে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপ বন্ধ করে দিতে হবে। কোনও ধরনের পর্দায় চোখ রাখা যাবে না। মোবাইল, ল্যাপটপের পর্দা থেকে নির্গত নীল রশ্মি চোখের জন্য ক্ষতিকর। ঘুম আসার পথেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
শেষ ধাপ শূন্য। এই ধাপ বলছে, সকালে অ্যালার্ম বাজার সঙ্গে সঙ্গেই ঘুম থেকে উঠতে হবে। আলস্য করে বিছানায় থাকলে চলবে না। সকালে ঠিক সময়ে উঠলে, রাতেও চট করে ঘুম আসবে।
গুরুগ্রামের ফুসফুস এবং স্লিপ মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণ চৌধরি কোতারুর কথায়, এই নিয়ম পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য কখন ক্যাফিন, অ্যালকোহল খাওয়া থামাতে হবে, যে বিষয়টি দরকার সেটি সহজ ভাবে মনে রাখতে সাহায্য করে। তিনি বলছেন,‘‘এই নিয়মটি মেজাজ, উদ্বেগ বশে রাখতে সাহায্য করবে। ঘুমেরও সুবিধা হয় এতে।’’