সুপারের ঘরের সামনে ভাঙচুর রোগীদের একাংশের। মঙ্গলবার বেলায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। —নিজস্ব চিত্র।
বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা পরিষেবা মেলেনি। এমন অভিযোগ তুলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুর চালালেন রোগীদের একাংশ। হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদেরও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় দুই মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
মঙ্গলবার সকালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের বহির্বিভাগ (আউটডোর)-এ যান রোগীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, বহির্বিভাগের একাংশ বন্ধ থাকায় তাঁরা চিকিৎসা পরিষেবা পাননি। তার পরেই সুপারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁদের কয়েক জন। উল্টে দেওয়া হয় চেয়ার। এমনকি সুপারের দফতরের ভিতরে ঢুকেও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে রোগীদের কয়েক জনের বিরুদ্ধে।
রোগীরা সুপারের ঘরের ভিতর ঢোকার চেষ্টা করলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের বাধা দেন। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। অভিযোগ, তখনই মারধর করা হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে তাঁরা বহির্বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না। প্রতি দিন এসে ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁদের। ওই রোগীদের আরও দাবি, তাঁরা হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের বাধা দেন।
মঙ্গলবার সকালে রোগীরা বহির্বিভাগের টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটেন। তার পর চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট কক্ষে গেলে পরে সেখানে সঠিক পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। রোগীদের অভিযোগ, মনোরোগ বিভাগ , স্নায়ু বিভাগে মিলছে না কোনও পরিষেবা। প্রসঙ্গত, প্রতি দিন সকাল থেকে শিলিগুড়ি-সহ শহরতলির দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা ভিড় জমাতে থাকেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে। মঙ্গলবার পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রথমে উত্তেজনা ছড়ায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বিভাগে। তার পর দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন মহিলারা।
ওয়াসিম আলি নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন , “প্রতি মাসে ওষুধের প্রয়োজন হয়। পুজোর ছুটি চলে গিয়েছে। ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। কিন্তু মনোরোগ বিভাগ বন্ধ। এখন বলছে আগে থেকে ওষুধ নিতে হবে। আমরা কোথায় পাব ওষুধ? এগুলো সব নাটক চলছে।” আর এক বিক্ষোভকারী মঞ্জুলা দেবী বলেন , “আমার ছেলের জন্য ওষুধ নিই। এখানে ওষুধও নেই, ডাক্তারও নেই। এখন আমরা কী করব?”
এই ঘটনা প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, “চিকিৎসকদের পেনডাউন চলছে , কাজেই ডাক্তার নেই। রোগীদের অভিযোগ থাকতেই পারে। তবে ওষুধ নেই, এমন অভিযোগ আগে কখনও পাইনি।”
গত রবিবার সকালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। হাসপাতালে উইকেট, হকি স্টিক নিয়ে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে কয়েক জনের বিরুদ্ধে।