—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ৩টের সময় দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে ওই দুই রাজ্যের ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন কমিশনের আধিকারিকেরা। সাংবাদিক বৈঠকে থাকতে পারেন দেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক রাজীব কুমার এবং অন্য দুই নির্বাচনী আধিকারিকও।
এই দুই রাজ্যের নির্বাচনের সঙ্গে বাংলার ছ’টি বিধানসভা ও একটি লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয় কি না, সে দিকেও নজর রয়েছে অনেকের। লোকসভা ভোটের পর থেকেই বিধায়কশূন্য রয়েছে রাজ্যের ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্র। এগুলি হল নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর, তালড্যাংরা, মাদারিহাট এবং সিতাই। নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন তৃণমূলের পার্থ ভৌমিক। তিনি ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। হাড়োয়ার তৃণমূল বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম পরে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। অবশ্য গত মাসে হাজি নুরুলের মৃত্যু হওয়ায় বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রটিও বর্তমানে সাংসদশূন্য অবস্থায় রয়েছে।
অন্য দিকে, মেদিনীপুরের বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হওয়া জুন মালিয়া লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। তালড্যাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে সংসদে গিয়েছেন। মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। আর সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ফল অনুযায়ী, এই ছ’টি কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটিই ছিল তৃণমূলের দখলে। কেবল মাদারিহাট কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। গত জুলাই মাসে রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। চারটি আসনই গিয়েছিল তৃণমূলের ঝুলিতে।
মহারাষ্ট্রে জোট বেঁধে সরকার চালাচ্ছে শিন্ডেপন্থী শিবসেনা, বিজেপি এবং অজিতপন্থী এনসিপি— এই তিন দলের ‘মহাদ্যুতি’ জোট। অন্য দিকে, শাসক শিবিরকে কড়া টক্করে ফেলতে জোট বেঁধে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস, শিবসেনা (ইউবিটি), এনসিপি (এসসিপি)— এই তিন দলের ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’ জোটও। লোকসভা আসনের নিরিখে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য মহারাষ্ট্র। তা ছাড়া মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বই দেশের বাণিজ্যনগরী হিসাবেই পরিচিত। তাই গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যে ফের ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। অন্য দিকে, ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টায় এনডিএ-ও। তবে লোকসভা ভোটের ফল তাদের খুব একটা স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। ২৮৮ আসনবিশিষ্ট মহারাষ্ট্র বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৬ নভেম্বর।
অন্য দিকে, আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া হেমন্ত সোরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতৃত্বাধীন ‘ইন্ডিয়া’। পাঁচ বছর পরে রাঁচীর কুর্সিতে বসার চেষ্টায় বিরোধী বিজেপিও। ৮১ আসনবিশিষ্ট ঝাড়খণ্ডে চলতি বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৫ জানুয়ারি। দুই রাজ্যেই সব পক্ষ ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন দিনক্ষণ ঘোষণা করার পরে দুই রাজ্যের আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোটের বাদ্যি বেজে যাবে।