চৈতালি মজুমদারের বাড়িতে মেয়র। —নিজস্ব চিত্র।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ির সংঘর্ষের দোষ কার, তাই নিয়ে চাপানউতর চলছে। এই পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়ির সহ-চালক এবং কাঞ্জনজঙ্ঘার যে যাত্রী মালগাড়ির চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন বলে জিআরপির দাবি, সেই দু’জনের সঙ্গে দেখা করলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। চৈতালি মজুমদার নামে আহত যাত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর মেয়র জানান, ‘ওই ভাবে’ সই করিয়ে নেওয়া ঠিক করা হয়নি। পাশাপাশি মালগাড়ির আহত সহকারি চালক মনু কুমারকে দেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গৌতম জানিয়েছেন, যে ভাবে দুর্ঘটনায় দায় মালগাড়ির মৃত চালকের উপর চাপানো হচ্ছে, সেটা ঠিক নয়।
ট্রেন দুর্ঘটনার পর চৈতালি নামে ওই মহিলা একটি এফআইআর করেছেন বলে দাবি করেছে জিআরপি। তাতে দুর্ঘটনার জন্য মালগাড়ির মৃত চালককে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু চৈতালি মঙ্গলবার থেকে দাবি করে আসছেন তিনি কোনও অভিযোগ করেননি। জিআরপি-ও তাদের দাবিতে অটল। এই চাপানউতরের মধ্যে শিলিগুড়ির লেকটাউনের বাসিন্দা চৈতালির সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে যান মেয়র। তিনি চৈতালির মুখে সেদিনকার অভিজ্ঞতার কথা শোনেন। চৈতালি জানান, তিনি কোনও অভিযোগ করেননি। হাসপাতালে এসে তাঁর বয়ান নেওয়া হয়েছিল। এখন তিনি মানসিক চাপে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অন্য দিকে, চালকের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়ে চৈতালিকে মেয়র আশ্বস্ত করেছেন। তাদের পক্ষ থেকেও বিষয়টি দেখা হবে বলে জানিয়েছেন গৌতম। তিনি বলেন, ‘‘সেই দুর্ঘটনা নিয়ে ভীত হয়ে আছেন উনি। তার পর এই মিথ্যা অভিযোগের তত্ত্ব এসেছে। সব মিলিয়ে ওঁর মানসিক পরিস্থিতি ঠিক নেই। ওঁরা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলবেন। আমরাও চেষ্টা করব আমাদের দিক থেকে। তবে এ ভাবে সই করিয়ে নিয়ে কেস দায়ের করাটা কাম্য নয়।’’
চৈতালির সঙ্গে দেখা করার পর শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে চলে যান মেয়র। সেখানে চিকিৎসাধীন মালগাড়ির সহকারি চালকের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন তিনি। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মেয়র বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে দেখা করলাম। শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিক ভাবে একেবারেই ভেঙে পড়েছেন উনি। এখন ওঁর সঙ্গে কথা বলাটা ঠিক হবে না। শুধু দেখে গেলাম। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বললাম। একটা আলাদা ঘোরের মধ্যে রয়েছেন উনি।’’ গৌতমের সংযোজন, ‘‘মৃত মানুষের ঘাড়ে দোষ চাপানো উচিত নয়। তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়াটা ঠিক নয়।’’