প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা এই সেতু জুড়েছে বাংলা ও সিকিমকে।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় সিকিমের ‘অটল সেতু’। প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা এই সেতু জুড়েছে বাংলা ও সিকিমকে। কালিম্পঙে তিস্তা নদীর পাশ ঘেঁষে রংপো নদীর উপর তৈরি এই সেতু সিকিমের রংপো পর্যন্ত গিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে উদ্বোধন করা হতে পারে ওই সেতুটি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সিকিমের গ্যাংটক থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অটল সেতু উদ্বোধন করতে পারেন।
তিস্তাবাজার হয়ে কালিম্পঙের কাছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে রংপো নদীর উপর তৈরি পুরনো সেতু দিয়ে সিকিম পৌঁছতে বা শিলিগুড়ি আসতে বেজায় সমস্যা পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় যানজটে থমকে সামরিক সরঞ্জামবাহী গাড়ি। এই বিষয়টি নজরে রেখে ২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু অতিমারির কারণে বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণকাজ। অবশেষে চলতি বছরে শেষ হয় সেতুর কাজ।
‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘নতুন সেতু অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে। এটা একটা মাস্টারপ্ল্যান। যা বাস্তবে রূপায়িত হল। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বাংলা থেকে সিকিমে প্রবেশের মুখে যানজটে শুধুমাত্র পর্যটকেরাই নয়, সাধারণ মানুষেরাও অতিষ্ট। কাজেই পর্যটকদের অনেক সুরাহা হবে। তবে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ককে ডবল লেন করে তোলা হলে ভোগান্তি থেকে সম্পূর্ণ ভাবে রেহাই মিলবে।
প্রায় ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া অটল সেতুর জন্য নিত্যদিনের যানজট থেকে মুক্তি মিললেও মাথায় হাত স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। কারণ, রংপো বাজারের এই পুরনো সেতুকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে বাজার ও শহর। এখানকার ব্যবসাও পুরোপুরি পর্যটন নির্ভর। স্থানীয় ছোট ব্যবসায়ী পাশাং লেপচা বলছেন, ‘‘উন্নয়ন হোক। কিন্তু পুরনো সেতুটা যাতে বন্ধ না হয়। ওই সেতুকে কেন্দ্র করেই আমাদের ঘরদোর আর ব্যবসা। ওটা বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের সর্বনাশ হবে।’’ সিকিমে ঢোকার আগে নিরাপত্তার কারণে পুরনো সেতুতে বহু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে পর্যটকদের গাড়ি। যা ব্যবসা হওয়ার সেই সময়েই হয়। আর এক ছোট ব্যবসায়ী প্রেম্বা থাপা বলেন, ‘‘সত্যি বলতে, ওই যানজট থেকেই আমাদের ব্যবসা। রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলে পর্যটকেরা আমাদের দোকানেই সময় কাটান। অটল সেতু চালু হলে তো সে সব বন্ধ হয়ে যাবে।’’