ভিড়: ব্যাঙ্কের সামনে ভিড়। জলপাইগুড়ি শহরে। নিজস্ব চিত্র
এর আগে তিনি হাততালি বাজাতে বলেছিলেন। লোকে ভিড় করে পথে নেমে কাঁসর-ঘণ্টা বাজিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে এ বারে মোমবাতি, টর্চ বা মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালাতে বলার সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিড় করতে বারণ করেছেন। কিন্তু তাতে কি কাজের কাজ কিছু হবে? এই প্রশ্ন তুলে দিল নিবেদিতা মার্কেটের একটি দোকান। সকালে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই নিজের মোমবাতি-ধূপকাঠির দোকান খুলে দিয়ে সেই দোকানি ঘোষণা করলেন, ‘‘যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী মোমবাতি জ্বালানোর কথা বলেছেন, সেখানে দোকান খুলতে বাধা কোথায়?’’ আশঙ্কা করা হচ্ছে একই যুক্তিতে আরও দোকান খুলবে এবারে।
নিবেদিতা মার্কেটের সেই দোকানির কথায়, ‘‘বাড়িতে মোমবাতি কিনে জমিয়ে রাখার জিনিস নয়। মোমবাতি না পেলে অনেকের সমস্যা হতে পারে। তাই মানুষ যাতে প্রধানমন্ত্রীর কথাকে সফল করতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই দোকান খুলেছি।’’ কেমন হয়েছে বিক্রিবাটা? দোকানি জানালেন, ভালই। আরও জানালেন, আজ শনিবার বিক্রি আরও বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে তাঁর। পুলিশ পরে খবর পেয়ে নিবেদিতা মার্কেটে যায়। কিন্তু ততক্ষণে দোকানকার বিক্রি সেরে দোকান বন্ধ করে ফিরে গিয়েছেন।
আরএসএসের দাবি, দীপাবলিতে আলো জ্বালানো হয় অন্ধকার দূরে সরাতে। সেইমতো প্রধানমন্ত্রীও আলো জ্বালিয়ে একে অন্যের সঙ্গে মিলে করোনা মোকাবিলা করার বার্তা দিয়েছেন। তা হলে কি এ বার পথে নেমে মোমবাতি মিছিল হবে? আরএসএসের উত্তরবঙ্গের এক কর্তা বলেন, ‘‘সকলকে মোমবাতি জ্বালাতে হবে, এমন কথা নেই। মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালালেও হবে। মানুষ যাতে পথে না নামেন, সে জন্য আমরা বার্তা দেব।’’
কিন্তু যে রোগের সংক্রমণ রোধে প্রধানত সামাজিত দূরত্ব বজায় রাখাকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যে কারণে প্রধানমন্ত্রী নিজেই দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছেন, এই ধরনের তালি বাজানো বা মোমবাতি, মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালানোর মধ্যে দিয়ে সেই উদ্দেশ্য কি লঘু হয়ে যাচ্ছে না? এই প্রশ্নই তুলেছেন বিরোধীরা। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেছেন, ‘‘দেশের মানুষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সঠিক পথ দেখার আশায় ছিল।’’ তিনি বলেন, ‘‘লকডাউন ভেঙে মোমবাতির দোকান খুললে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’