গুরুত্বপূর্ণ: তিস্তায় দ্বিতীয় সেতু পাচ্ছে জলপাইগুড়ি। নিজস্ব চিত্র
ছয় দশক পরে তিস্তায় দ্বিতীয় সেতু পাচ্ছে জলপাইগুড়ি। উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগকারী প্রধান সড়ক পথে জলপাইগুড়িতে তিস্তার উপরে প্রথম সেতু তৈরি হয়েছিল ষাটের দশকে। বাষট্টি সালে চিন-ভারত যুদ্ধের সময়ে জলপাইগুড়ি শহর ছুঁয়ে বালাপাড়া থেকে দোমহনী পর্যন্ত এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু সেনাবাহিনীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তার আগের বছরই সেতুটি তৈরি হয়। গত কয়েক দশকে সেতুর সার্বিক সংস্কার হয়নি। শুধুমাত্র পিচ রাস্তায় জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। সেতুর বেশ কয়েকটি স্তম্ভ দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে পূর্ত দফতর এক দশক আগেই রিপোর্ট দিয়েছিল। গত বছর সেতুর চাঙরও খসে পড়ে। সেতুর সড়ক জাতীয় সড়কে উন্নীত হয়েছে। এই পথেই যাচ্ছে পূর্ব পশ্চিম মহাসড়কের চার লেন। দ্বিতীয় লেন তৈরির জন্য দ্বিতীয় সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল বছর তিনেক আগে। মাঝখানে কাজে ঢিলেমি আসে বলে অভিযোগ। সপ্তাহ দুয়েক হল দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ষার আগেই নতুন সেতু চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সিকেও সেই নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের গোড়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ময়নাগুড়িতে এসেছিল। হেলিকপ্টার করেই সভাস্থলে পৌঁছন মোদী। যদিও প্রথা মাফিক কোনও এলাকায় প্রধানমন্ত্রী এলে কাছাকাছি বিমানবন্দর থেকে সভাস্থলের সড়কে পৌঁছনোর রাস্তাও দেখে রাখা হয়। সে ক্ষেত্রে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি হয়ে চূড়াভাণ্ডারে পৌঁছনোর রাস্তা দেখে রাখা হয়েছিল। সেই পথে পড়েছিল তিস্তা সেতু। পথের সমীক্ষা করার সময়ে তিস্তা সেতু নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা। সূত্রের খবর, সেতুটি অত্যন্ত দুর্বল, তাই যথেষ্ট নিরাপদ নয় বলে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়াও এই সেতু দিয়ে উত্তরপূর্ব ভারতের পণ্যবাহী সব লরি যায়। সেতু বেহাল থাকায় মাঝেমধ্যেই যানজট লেগে থাকে। দ্বিতীয় সেতু তৈরির পরে সেই সমস্যা মিটবে বলে দাবি।
দ্বিতীয় সেতুতে আর একটি কংক্রিটের পাটাতন বসানো বাকি রয়েছে। সেতু লাগোয়া এলাকাতেই বড় বড় কংক্রিটের পাটাতন তৈরি করে ক্রেনের সাহায্যে বসানো চলছে। সেতুর প্রায় পাঁচশো মিটারে ঢালাই হয়েছে। শেষ পাটাতন বসে গেলে বাকি অংশেও ঢালাই শুরু হবে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, দ্বিতীয় সেতু চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পরে পুরনো সেতুটিও বন্ধ রেখে সংস্কার করা হবে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প ম্যানেজার প্রদ্যোৎ দাশগুপ্ত বলেন, “বর্ষার আগেই দ্বিতীয় সেতু যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়া হবে। কাজ বাকি বেশি নেই। দিল্লি থেকেও সেতুর সম্পর্কে খবর নেওয়া হচ্ছে।” প্রথমটি থেকে দ্বিতীয় সেতু চওড়া বলে দাবি। দুই লেনে সেতু দিয়ে যাতায়াত করা যাবে। পাশের পুরনো সেতুতে বাকি দুই লেন থাকবে।