লুট: ভেঙে ফেলা এটিএম। নিজস্ব চিত্র
ফের চুরি হল শহরে। এ বার রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের একটি এটিএমের সামনের লোহার সাটার নামিয়ে গ্যাস কাটার দিয়ে যন্ত্র কেটে লক্ষাধিক টাকা লুট করল দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ৩১ডি সড়কের ধারে জটিয়াখালি বাজার এলাকার ঘটনা। এলাকাটি এনজেপি থানার অন্তর্গত। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
পুলিশ জানিয়েছে, এটিএমটিতে কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। এটিএমে যে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল তাতে কালো কালি জাতীয় কিছু মাখিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। যদিও ওই এটিএমের সিসিটিভি ক্যামেরা মাসখানেক ধরে খারাপ। সেখান থেকে কোনও ফুটেজ মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিন রাতে পুলিশের একাংশ জানান, ১৩ লক্ষ টাকা চুরি হয়েছে।
গত একমাস ধরে শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকার বেশ কয়েকটি এটিএমে হানা দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সম্প্রতি মাটিগাড়া থানার হালেরমাথা, মেডিক্যাল মোড়ের দু’টি এটিএমে ভাঙচুর চালানো হলেও লুট করতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। এরপরে ডাবগ্রাম, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আর একটি এটিএম ভেঙে তা তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও হয়েছিল। এটিএমে হামলা ছাড়াও শহর ও লাগোয়া এলাকার একাধিক জায়গায় পরপর ছোট-বড় লুট ও ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। এ সব ঘটনা রুখতে বিভিন্ন থানা এলাকায় নজরদারি, নাকা-তল্লাশি বাড়িয়েছিল পুলিশ। তারমধ্যেই ফের লুট হল এটিএমে।
পুলিশ সূত্রের খবর, জটিয়াখালি মেন রোডের ধারে একটি দোতলা বাড়ির উপরের তলায় ওই ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে। তার নীচে রয়েছে এটিএমটি। আশেপাশে দোকানপাটও রয়েছে। রাতের দিকে এলাকাটি ফাঁকা হয়ে যায় বলে দাবি স্থানীয়দের একাংশের। ব্যাঙ্কের পিছনের দিকে খালি জমিও রয়েছে। শুক্রবার সকালে এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা এটিএমটি ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। বাড়িটির মালিক মহম্মদ আলম জানান, সকালে স্থানীয়দের থেকেই তিনি লুটের খবর পান।
এ দিনই ঘটনাস্থলে যান এনজেপি থানার ওসি অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ডিসি (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। ডিসি বলেন, ‘‘এটিএম ভেঙে টাকা লুট হয়েছে। ঠিক কত টাকা লুঠ হয়েছে তা ব্যাঙ্কের তরফে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার কাজও শুরু হয়েছে।’’
দু’দিন আগেই শিলিগুড়িতে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, জুয়েলারি, বিভিন্ন ঋণদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে নিরাপত্তা, নজরদারির নানা বিষয় নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে শাখাগুলিতে নিরাপত্তারক্ষী, সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিকঠাক রাখার উপর জোর দেওয়া হয়। কয়েকমাস ধরে এটিএমের সিসিটিভি ক্যামেরা খারাপ থাকলেও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সেই প্রশ্ন উঠছে।
ব্যাঙ্কটির ওই শাখার ম্যানেজার প্রণব চন্দ্রা’র দাবি, ‘ভেন্ডারে’র মাধ্যমে এটিএমটি চালানো হয়। পুলিশ ওই সংস্থার সঙ্গে কথা বলছে। ঘটনার পরে এলাকায় যান নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুরজিৎ পাল। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর আগে শহরের একের পর এক ঘটনা ঘটছে। আমরা পুলিশের উপর ভরসা রাখছি। নজরদারি, দ্রুত ধরপাকড় দরকার।’’