পাহারা: ডাকাতির পরে বসেছে পুলিশের পাহারা । নিজস্ব চিত্র
খালপাড়া ফাঁড়ি থেকে মাত্র আধ কিলোমিটার দূরে বহুতলটি। তারই তৃতীয় তলে সোনা বন্ধক রেখে ঋণপ্রদানকারী একটি সংস্থার দফতর থেকে শনিবার দিনেদুপুরে বড় মাপের ডাকাতি হয়ে গেল। অভিযোগ, বন্দুক-পিস্তল নিয়ে পাঁচ জন ডাকাত বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাণ্ডব চালায় ওই অফিসে। পুলিশ জানিয়েছে, পিস্তলের বাট দিয়ে তারা এক নিরাপত্তারক্ষী এবং এক ব্যাঙ্ককর্মীকে জখম করে কয়েক লক্ষ নগদ টাকা এবং বেশ কয়েক কেজি সোনা নিয়ে চম্পট দেয়। ঘটনার পরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শিলিগুড়ির ব্যবসায়ী মহলে। পুজোর বাজারের ধুম পড়ে যাবে কয়েক দিনের মধ্যেই। এই সময়ে এমন জনবহুল এলাকায় দুঃসাহসিক ডাকাতি চিন্তায় ফেলেছে পুলিশ-প্রশাসনকেও। তদন্তে নেমেছে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের একাধিক থানা, গোয়েন্দা বিভাগ এবং সাইবার ক্রাইম বিভাগ। জখম দু’জনকে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।
শনিবার দুপুর তখন পৌনে তিনটে। শিলিগুড়ি থানার খালপাড়া ফাঁড়ির বর্ধমান রোডে কারবালা মসজিদ লাগোয়া এলাকায় ঋণপ্রদানকারী সংস্থার অফিসে ঢুকে পড়ে দুই ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রাহক পরিচয় দিয়ে ঢোকেন ওই দু’জন। কিছু সোনা ওজন করিয়ে জানতে চান, তার বদলে কত টাকা ঋণ পাওয়া যাবে? সংস্থার কর্মীরা ঋণের অঙ্ক জানালে তাঁরা বলেন, ‘এখুনি ঘুরে আসছি।’ তার পর দরজার কাছে গিয়ে বাইরে অপেক্ষায় থাকা আরও তিন জনকে ইশারা করেন। অভিযোগ, ভিতরে ঢোকেন আরও তিন পিস্তলধারী। নিরাপত্তারক্ষী অশোক গুপ্ত এবং ব্যাঙ্ককর্মী দিগ্বিজয় মণ্ডলকে মাথায় পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করেন তাঁরা। তিন বন্দুকধারীর একজন রিসেপশনে, একজন গ্রাহকদের দিকে বন্দুক তাক করেন।
ওই সংস্থার উত্তরবঙ্গের নিরাপত্তা আধিকারিক অজয় সিংহ বলেন, ‘‘ডাকাতরা ব্যাঙ্ককর্মীদের বলে, অ্যালার্ম বাজালেই গুলি করবে। রক্তাক্ত দুই কর্মীকে দেখে কেউ আর এগোতে সাহস পায়নি।’’ তিনি জানান, তৃতীয় দুষ্কৃতী শাখার ম্যানেজার কনকরঞ্জন রায়ের ঘরে ঢুকে বন্দুক দেখিয়ে ভল্ট খোলায়। তিনি অভিযোগ করেন, ভল্ট থেকে প্রায় ৪৮ কেজি সোনা এবং লাখতিনেক টাকা একটি কালো ব্যাগে ভরে চম্পট দেয়। পুরো অপারেশনটি ৩৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করে ডাকাতরা। বিকেল চারটে নাগাদ পুলিশকে ফোনে ঘটনা জানায় সংস্থাটি।
সংস্থার তরফে বলা হয়, হিসেব মিলিয়ে দেখার পর লিখিত অভিযোগ দায়ের হবে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সদর) অমিতাভ মাইতি, ডিসি (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু সিসিটিভি ফুজেট পেয়েছি। কয়েক জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।’’
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে নেমে সন্দেহজনক একটি মোটরবাইক ও একটি ছোট সেডান গাড়ির উপস্থিতির কথা জানতে পেরেছে।