উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশীতে সুড়ঙ্গে আটক কোচবিহারের বলরামপুরের বাসিন্দা মানিক তালুকদার ফিরে এলেন, সাদরে বরন পরিবার পরিজনের। নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে ঘরে ফিরলেন তাঁরা। উত্তরকাশীর ধসে পড়া সুড়ঙ্গ থেকে মুক্তির পরে শুক্রবার মানিক তালুকদারকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছলেন তাঁর দুই আত্মীয় বিনয় তালুকদার, গৌতম চন্দ্র। তিন জনের মুখেই বিজয়ীর হাসি। এত দিনের ক্লান্তির ছাপ উধাও। তাঁরা বলছেন, ‘‘যুদ্ধ জয় করে ফিরেছি। হাসি তো থাকবেই।’’
১২ নভেম্বর উত্তরকাশীতে সুড়ঙ্গে ধস নেমে ভিতরে আটকে পড়েছিলেন মানিক। ২৩ নভেম্বর বিনয় ও গৌতম পৌঁছন উত্তরকাশীতে। তার পরে শুরু অপেক্ষা আর উৎকন্ঠার পালা। ওই সময়ে কখনও আশার আলো ফুটে উঠেছে, কখনও ক্ষীণ হয়েছে আলো।
মানিকের ভাইপো বিনয় এ দিন বলেন, ‘‘আমরা উত্তরকাশীতে পৌঁছনোর ছ’দিন পরে, কাকাকে উদ্ধার করা হয়। ওই ছ’দিন আমাদের কাছে যেন ছ’বছর ছিল। সময় কাটছিল না।’’ বাড়িতে পৌঁছে আনন্দে ভাসছেন বিনয়। তিনি বলেন, ‘‘কাকাকে সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছি। এটা আমাদের বড় জয়।’’ মানিকের আর এক আত্মীয় গৌতম বলেন, ‘‘ওই সময়ে প্ৰতিটি মুহূর্তে পরিস্থিতি বদল হয়েছে। কখনও আমাদের মনে হয়েছে, আর বেশি সময় লাগবে না। আবার কখনও মনে হত, আরও অনেক দিন সময় লাগবে। আজ আমরা সবাই এক সঙ্গে বাড়িতে ফিরেছি। বাড়ির সবাই খুশি। আমাদের প্রার্থনা সফল হয়েছে।’’
১২ নভেম্বর উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ ধসে আটকে পড়েছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। তার মধ্যে ছিলেন মানিক। মানিকের দুই আত্মীয় ওই পরিস্থিতিতে পৌঁছন সেই সুড়ঙ্গ-মুখের কাছে। সেখানে মানিকের জন্য বরাদ্দ ঘরেই থাকতে দেওয়া হয় তাঁদের। মানিকের সঙ্গে ওয়াকিটকিতে কথাও বলিয়ে দেওয়া হয়। তাতে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হয়েছিলেন দু’জনে।
তাঁদের কথায়, ‘‘ওঁর (মানিক) মনে অনেক জোর। সেই জোরই কাজে লেগেছে। শুধু নিজের নয়, অন্যদেরও উৎসাহ দিয়েছেন উনি। সবাই আজ বাড়ি ফিরতে ফিরেছেন, এটাই আনন্দ।’’