রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক রাজবংশী নন, এমনটাই অভিযোগ তুললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীরবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবিবার বিকেলে মন্ত্রীর নিজের বিধানসভার কেন্দ্র নাটাবাড়ির ফুটবল মাঠে এক জনসভায় তিনি নিশীথকে আক্রমণ করেন। তিনি আরও দাবি করেন, বিজেপি সাংসদ রাজবংশী সম্প্রদায়ের লোক, এমন কোনও কাগজ দেখাতে পারবেন না। মন্ত্রীর ওই বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও কাগজ দেখানোর বিপক্ষেই আন্দোলন করছে। সেখানে বিজেপির সাংসদের কাছে কী করে কাগজ দেখতে চাইলেন মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, “কোচবিহারের বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক কোচবিহারের রাজাদের পাগড়ি পরে জেলাবাসীর ভাবাবেগে আঘাত করছেন।’’ এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “যা বলেছি ঠিক বলেছি।” নিশীথ বলেন, “তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ খুইয়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মতিভ্রম হয়েছে।”
জেলা রাজনীতিতে রবীন্দ্রনাথ-নিশীথ বিরোধ দীর্ঘদিনের। নিশীথ একসময় জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তখন তিনি রবীন্দ্রনাথ-বিরোধী বলেই পরিচিত ছিলেন। পরে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। বিজেপিতে ঢুকে সাংসদ হন নিশীথ। সেই সময় ভোট প্রচারেও রবীন্দ্রনাথ-নিশীথ বাগ্যুদ্ধে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল কোচবিহারে।
দলীয় সূত্রের খবর, রবিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নাটাবাড়ি ফুটবল খেলার মাঠে পৌঁছনোর আগে রাস্তায় একটি কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদের একটি হোর্ডিং ঝুলতে দেখেন। ছবিতে সাংসদ পাগড়ি পরা। নাটাবাড়ি জনসভায় দীর্ঘ বক্তব্য দেন মন্ত্রী। বক্তব্যের মাঝেই নিশীথ প্রামাণিকের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। বলেন, “একজন নিশীথ প্রামাণিক কোচবিহার রাজাদের পাগড়ি পরেন। রাজাদের এমন পাগড়ি পরতে পারে না। এর ফলে জেলায় মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগছে।’’ তিনি আরও বলেন, “নিশীথ প্রামাণিকের মা রাজবংশী বংশের হলেও তাঁর বাবা রাজবংশী নন। রাজবংশীর কাগজ নিশীথ প্রামাণিক দেখাতে পারবেন না।”
সামনে বিধানসভা ভোট। উত্তরবঙ্গে রাজবংশী ভোটের দিকে তাকিয়ে গেরুয়া শিবির। পাগড়ি এবং নিশীথ প্রামাণিক রাজবংশী বংশোদ্ভূত নয়— মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে তুফানগঞ্জ মহকুমার চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিশীথ বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কোচবিহার জেলা তৃণমূলের পদ খুইয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। কোনওদিন সামনাসামনি হলে রাজবংশী প্রমাণের কাগজ দেখিয়ে দেব। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।’’ পাগড়ি প্রসঙ্গে সাংসদের বক্তব্য, “রাজবংশীদের কৃষ্টি সংস্কৃতি এমন পাগড়ি। যে পাগড়ি পরা হয়েছে, সেটা কোচবিহার রাজাদের নয়। মন্ত্রী আমাদের রাজবংশীদের সংস্কৃতি জানেন না। ওঁর মতো লোকের কাছে এমন কথাই আশা করা যায়।’’