প্রতীকী ছবি।
বরাদ্দের তালিকায় নাম রয়েছে, অথচ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হাতে ডিজিটাল কার্ড নেই, কুপনও নেই। এমন অভিযোগ প্রতিদিনই শুনতে হচ্ছে জেলা প্রশাসনকে। চলতি মাসের শুরু থেকে পরপর এমন অভিযোগে প্রশাসনের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, বরাদ্দের পুরোটা প্রাপকদের হাতে পৌঁছচ্ছে তো?
ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়ছে জেলা প্রশাসনের কাছে। বহু পুরনো গ্রাহকও এমন অভিযোগ করছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এছাড়াও অভিযোগ আসছে যে ডিজিটাল কার্ড বা কুপন কিছুই না পাওয়ায় রেশন মিলছে না। বহু বাসিন্দার নামে কুপন তৈরি হয়েছে তা পোর্টালে দেখালেও সেই ব্যক্তি হাতে কুপন পাননি এমন অভিযোগও উঠেছে। যার ফলে প্রশাসনের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনের একাংশের দাবি, এতদিন অনেকেই রেশনে পাওয়া নিজেদের খাদ্য সামগ্রী নেননি। লকডাউনে রেশন নেওয়ার তাগিদ বেড়েছে। তখনই যোগাযোগ করে জেনেছেন পুরনো কার্ডে রেশন পাওয়া যাবে না। তারপরেই প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই ব্যক্তিরা।
শুক্রবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের দফতরে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে খাদ্য দফতরের আধিকারিক ও সব ব্লকের বিডিওরা ছিলেন। ব্লকগুলি থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বহু গরিব মানুষের হাতে ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই, কুপনও পাননি। বিডিওদের একাংশের প্রশ্ন, যাদের হাতে ডিজিটাল রেশন কার্ড বা কুপন নেই তাঁদের নামে বরাদ্দ এতদিন খোলাবাজারে যায়নি তো?
প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, রেশন ব্যবস্থায় নজরদারি করতে জলপাইগুড়িতে ২৩টি দল তৈরি হয়েছে। প্রতি দলের মাথায় একজন করে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। এরা ডিলারের গুদামে মজুত খাদ্যশস্য থেকে বিলি বণ্টনের তদারকি শুরু করেছেন। এপ্রিলের শেষ থেকে দলটি সক্রিয় হয়েছে। মে মাসে সব ধরণের কার্ডেই অতিরিক্ত রেশন মিলছে। তারপরেই শুরু হয়েছে রেশন না পাওয়ার অভিযোগ। প্রশাসনের এক কর্তার প্রশ্ন, “এপ্রিলেও ডিজিটাল কার্ড এবং কুপনে খাদ্য শস্য বরাদ্দ হয়েছে। চলতি মাসেও কুপন দেওয়া হয়েছে। তারপরেও কার্ড নেই, কুপন নেই বলে এত অভিযোগ আসছে কেন বোঝা যাচ্ছে না।”
সম্প্রতি লকডাউনে রেশন নিয়ে নানা রিপোর্ট খতিয়ে দেখে প্রশাসনের নজরে আসে জেলায় অন্তত ৩ লক্ষ লোকের রেশন কার্ড নেই। এর পাশাপাশি বরাদ্দ তালিকায় নাম থাকলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হাতে ডিজিটাল কার্ড বা কুপন নেই এমন অভিযোগও আসতে শুরু করেছে। এতেই অনিয়মের আঁচ করছে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। যদিও জেলার খাদ্য নিয়ামক অমৃত ঘোষ বলেন, “আমাদের কর্মী, ইন্সপেক্টররা রেশনের পুরো প্রক্রিয়ায় নজরদারি চালাচ্ছেন। কোথাও কোনও অনিয়মের অভিযোগ নেই। জেলায় সুষ্ঠু ভাবেই রেশন বিলি চলছে।”