প্রতিবাদ: হায়দরাবাদে মহিলা পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে খুনের প্রতিবাদে মেয়েরা, মোমবাতি জ্বালালেন বালুরঘাটের থানা মোড়ে। শনিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত
দিল্লিতে নির্ভয়া কাণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। তার পরে ধর্ষণ আইন সংশোধন হয়েছে। ‘বেটি বচাও বেটি পড়াও’ স্লোগান উঠেছে। কিন্তু পরিস্থিতি কি খুব বদলেছে? সম্প্রতি ধর্ষণ করে খুন করা হল হায়দরাবাদের এক পশু চিকিৎসককে। শনিবার মালদহে একটি তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণ করা করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার। সেই অত্যাচারিত শিশু এখন মালদহ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন।
শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ২৪ বছরের এক যুবক। সে কাঁথা সেলাইয়ের কাজে ওই বাড়িতে গিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তার পরে বাড়ির ফাঁকা থাকার সুযোগ নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই শিশুর মা নিজেই। এই ঘটনার পরে ভালুকা ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিও ওঠে সেখান থেকে।
বস্তুত, এমন ঘটনা সামলাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন এলাকার অনেকেই। বিচারে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়া বা বিচার শেষে সাক্ষ্যের অভাবে দোষীদের পার পেয়ে যাওয়ার উদাহরণ দিলেন চাঁচলের সমাজকর্মী আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘‘অনেক সময়েই বিচার পেতে বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক সময় হাতেনাতে ধরা পড়ার পরেও সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে কেউ কেউ ছাড় পেয়ে যায়। মেয়েদের সুরক্ষার কথা ভেবে সরকারকে এ ক্ষেত্রে আরও কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে, যাতে এমন অন্যায় করার কথা কেউ ভাবতেও ভয় পায়।’’
চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী স্কুলের প্রাণীবিদ্যার শিক্ষক কমলকৃষ্ণ দাস বলেন, ‘‘ইন্টারনেট সহজলভ্য। তাই যৌন উত্তেজনামূলক লেখা বা ছবি সহজেই হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। এর ফলে মানসিক বিকৃতি বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল। এমনটা চললে আগামীতে ধর্ষণের ঘটনা কমানো কঠিন হবে।’’
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল সাহা বলেন, ‘‘শিশুদের কষ্ট দিয়ে যৌন নিগ্রহের এই ঘটনাকে চিকিৎসা পরিভাষায় পিডোফিলিয়া বলা হয়। যা বিকৃত যৌন মানসিকতার উদাহরণ। সমস্যাটা আগেও ছিল, কিন্তু ইন্টারনেট সেটাকে এখন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’’ তিনি জানান, হরিশ্চন্দ্রপুরে শিশুটির ক্ষেত্রেও অভিযুক্তের মানসিক বিকৃতিই কাজ করেছে বলে মনে হয়। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের রোগী চিকিৎসকের কাছে আসেন না। ওরা জানে এটা অপরাধ, তবুও আসে না।’’