উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।
উপাচার্য সিএম রবীন্দ্রন আইনি প্রশ্ন তুলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে চিঠি পাঠানোয় মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হল না। সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিতও। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আসছেন না। গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতি’র শাখা। এ দিন তারা প্রতিবাদ-মিছিল করে প্রশাসনিক ভবনে বিক্ষোভ দেখায়। কুশপুতুল পোড়ানো হয়।
সংগঠনের তরফে মুখপাত্র তন্ময় বাগচী বলেন, ‘‘১ মার্চের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, উপাচার্য যথাযথ সাড়া না দিলে, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বর্ধিত হারে বেতন দিতে নির্দেশ কার্যকর করবেন। বিভাগীয় প্রধান এবং প্রশাসনিক প্রধানেরা তাঁকে সে ক্ষমতা দিয়েছিলেন ওই বৈঠকে। অথচ, সোমবার থেকে দেখতে পাচ্ছি, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপস্থিত নন। উপাচার্যও নেই। এই ভূমিকার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’ এ দিন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বহু চেষ্টাতেও যোগাযোগ করা যায়নি।
আন্দোলনকারীদের দাবি, উপাচার্য ১৯ ফেব্রুয়ারি বেতন বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, রাজনৈতিক কারণে তা থেকে সরে এসেছেন। আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ‘একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসাবে’ তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির দাবিতে বেতন বৃদ্ধির যে উদ্যোগ হচ্ছিল, তা নাকচ করতে বিভিন্ন আয়োজন করছেন। তাঁরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জিত রায় বলেন, ‘‘প্রয়োজনে, রাজভবন ঘেরাও হবে।’’
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-নেতাও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আইনি পরামর্শ দিচ্ছেন। আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, "অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। প্রয়োজন হলে, সম্মানহানির জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।"
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বৈঠক করে। সংগঠনের তরফে সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার বিষয়টি আচার্য, উপাচার্য, শিক্ষামন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, জেলাশাসককে জানিয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হবে। অস্থায়ী কর্মীদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের সহানূভূতি রয়েছে। কিন্তু অচলাবস্থা তৈরি হলে, প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে আমরা পাল্টা নামব।’’ তিনি জানান, এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি আগামী ১২ মার্চ বৈঠকে বসবে।