প্রতীকী চিত্র
লকডাউনের জেরে ধাক্কা লেগেছে সরকারি ঋণ দেওয়ার কাজে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছে সেই প্রক্রিয়া। সোমবার জেলা প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে জানা গিয়েছে, ১৪ হাজারের বেশি কৃষককে ঋণ দেওয়া হয়নি। যেখানে চলতি মাসের মধ্যে ২৪ হাজারেরও বেশি কৃষককে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল জলপাইগুড়িতে। প্রশাসন সূত্রে খবর, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ঋণ, মৎস্যজীবীদের ঋণ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভর্তুকি ঋণের লক্ষ্যমাত্রার ৫৬ শতাংশও পূরণ হয়নি। লকডাউনের কয়েক মাসের হিসেবে মাত্র ১২ শতাংশ ঋণ দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে দাবি।
সূত্রের খবর, এমন তথ্যে প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মণ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন বেশি করে ঋণ দেওয়া হয়নি? বহু আবেদন মঞ্জুরও হয়নি বলে সভায় জানানো হয়। ক্ষুব্ধ সভাধিপতি বলেন, “বৈঠকে যা তথ্য পেয়েছি তাতে তো ৭০ শতাংশ আবেদনকারী ঋণ পাননি। এটা মানা যায় না। ব্যাঙ্কগুলিকে আরও দায়িত্বশীল এবং সক্রিয় হতে হবে। জেলা পরিষদ থেকে ব্যাঙ্কে পরিদর্শন হবে, বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছি।”জলপাইগুড়ির লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার দেবজিৎ লাহিড়ি বলেন, “লকডাউনের কারণেই ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া যথাযথ ভাবে হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি আগামী কয়েকমাসে ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সকলেই আশ্বাস দিয়েছেন।’’
লকডাউনে প্রান্তিক বাসিন্দাদের হাতে নগদ অর্থের জোগান বাড়াতে বেশি ঋণ মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। যদিও জলপাইগুড়ি জেলায় তা হয়নি বলে প্রশাসনিক স্তরেই অভিযোগ উঠেছে। সদর মহকুমাশাসক রঞ্জন দাসের কথায়, “কিছু ব্যাঙ্ক কাজ করেছে, তবে অনেক ক্ষেত্রেই ঋণ না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেগুলি দ্রুত মেটাতে বলা হয়েছে।”অন্তত ১৫টি প্রকল্পে ভর্তুকি ঋণ দেওয়া হয়। সরকারি-বেসরকারি উভয় ব্যাঙ্ককেই এই ঋণ দেওয়ার কাজ করতে হয়। লিড ব্যাঙ্ক এবং নাবার্ডও ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় নজরদারি চালায়। ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় ব্যাঙ্ক এবং প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। ব্যাঙ্ককর্তাদের দাবি, প্রশাসকে সচেতন করতে হবে ব্যাঙ্কে আসার জন্য, কোন প্রকল্পে ঋণ পাওয়া যাবে সেটা প্রশাসনকেই জানাতে হবে।