—ফাইল চিত্র।
বুধবার বিকেলে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর ইস্তফার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই একযোগে ইস্তফা দিলেন মালদহের বামনগোলা ব্লকের তৃণমূলের পাঁচ অঞ্চল সভাপতি। নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিলেও দলের সঙ্গেই রয়েছেন বলে ইস্তফা পত্রে উল্লেখ করেছেন তাঁরা। তবে একসঙ্গে পাঁচ অঞ্চল সভাপতির ইস্তফা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও।
তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, দাদা (শুভেন্দু) মালদহে দলের পর্যবেক্ষক থাকার সময় পঞ্চায়েত স্তরের নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। ফলে একযোগে পাঁচ অঞ্চল সভাপতির ইস্তফা যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও প্রকাশ্যে অঞ্চল সভাপতিদের ইস্তফার বিষয়কে আমল দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। মালদহের তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার বলেন, “নতুন করে জেলার সমস্ত অঞ্চলের কমিটি গঠন হচ্ছে। বামনগোলা ব্লকের পাঁচটি অঞ্চলেরও নতুন করে কমিটি হচ্ছে। তাই ওই ইস্তফার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
বামনগোলা ব্লকে ছ’টি অঞ্চল। এ দিন বামনগোলা, পাকুয়াহাট, চাঁদপুর, জগদলা এবং গোবিন্দপুর-মহেশপুর অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতিরা দুলালের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেই মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি ইস্তফা দেন। তারপর থেকে ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সভাপতি নেই। এখন প্রশ্ন উঠছে আচমকা একযোগে পাঁচ অঞ্চল সভাপতি কেন ইস্তফা দিলেন? গোবিন্দপুর-মহেশপুর অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি মানিক মাহাতো বলেন, “দল গঠনের সময় থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছি। এখন দলে আমাদের গুরুত্ব নেই। ঠিকাদার, ব্যবসায়ীদের দিয়ে ব্লকে দল চলছে।” পদ থেকে ইস্তফা দিলেও দলেই থাকব বলে জানান তিনি।
তৃণমূলেরই একাংশের নেতৃত্বের দাবি, হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের দলের প্রার্থী ছিলেন অমল কিস্কু। তিনি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র দু’হাজার ভোটে হেরে গিয়েছিলেন তৎকালীন সিপিএম প্রার্থী খগেন মুর্মুর কাছে। আর উপনির্বাচনে বিজেপির জোয়েল মুর্মুর কাছে তিনি হেরেছেন প্রায় ৩০ হাজার ভোটে। ভোটে হারলেও ব্লক সভাপতি করা হয়েছিল অমলকে। তিনি জেলার রাজনীতিতে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি, নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সভার দিন দিঘা সফরেও গিয়েছিলেন অমল। পাঁচ অঞ্চল সভাপতি আবার তাঁর ঘনিষ্ঠ। ফলে শুভেন্দু বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার দিনই পাঁচ জনের পদত্যাগ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে অনেকেই। অমল বলেন, “আমি তৃণমূলেই রয়েছি। অঞ্চলের নেতাদের ইস্তফা নিয়ে আমার কিছু জানা নেই।”
এরই মধ্যে, পুরাতন মালদহের সাহাপুর অঞ্চলে কংগ্রেসের প্রবীন নেতা মহম্মদ তুহুর আলি মণ্ডল চার শতাধিক অনুগামী নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে জানান দুলাল।