প্রতীকী চিত্র
উত্তরবঙ্গের চা বলয়ের সংগঠনের উপর এ বার নজর দিচ্ছে প্রশান্ত কিশোরের টিম। আগামী বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সেই প্রস্তুতি। সূত্রের খবর, এই প্রক্রিয়ায় সরাসরি নজর রেখেছেন খোদ দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ লোকসভা ভোটে চা বলয়ে বিজেপির কাছে পর্যুদস্ত হতে হয়েছিল তৃণমূলকে। সূত্রের খবর, সেই কারণেই এই অঞ্চলে এ বার সংগঠনে গোছাতে চলেছে তৃণমূল।
এই কাজে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন এলাকার চা শ্রমিক সংগঠনগুলিকে একজোট করে একটিই সংগঠন করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষ নেতা জানান, দলনেত্রীর নির্দেশেই হচ্ছে এমন পদক্ষেপ। এছাড়া, গোষ্ঠী কোন্দল বন্ধ করার জন্যও উদ্য়োগী হচ্ছে তৃণমূল। গত সপ্তাহেই দলের নেতা ও রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য মলয় ঘটক শিলিগুড়িতে এসেছিলেন। গোটা উত্তরবঙ্গের দলের চা শ্রমিক নেতাদের নিয়ে তিনি টানা বৈঠক করেছেন। সেখানেই সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে চা শ্রমিকদের একটিই সংগঠন করা হবে।
উত্তরের ৫৪টি বিধানসভা আসনে মধ্যে ১২টি আসন সরাসরি চা বাগান এলাকায় রয়েছে। আর একে ঘিরে আরও অন্তত ১২-১৩টি আসন আছে। এই ২৫টি আসনকে লক্ষ্য করে কাজ হচ্ছে। চা বাগান এক সময়ে বামেদের ঘাঁটি ছিল। তা কার্যত শেষ বলা চলে। সেখানে কিছু কিছু জায়গায় গেরুয়া শিবির সক্রিয় হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে ভোটও পেয়েছে। তবে তারপরেও গেরুয়া শিবিরকে ধাক্কা দিতে সমর্থ হয়েছে তৃণমূল। শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠনের কমিটি ভেঙে দলবদল করিয়েছে ঘাসফুল শিবির। গত দু’টি বিধানসভা ভোটের নিরিখে তৃণমূল একসময়কার বামেদের মত চা বাগিচায় এখনও শেষ কথা হয়ে উঠতে পারেনি। যার মূল কারণ, দলের চারটি চা বাগানের শ্রমিক সংগঠন এবং তার জন্য তৈরি হওয়া কোন্দল বলেই মনে করা হচ্ছে। এখন এক শিল্প, এক সংগঠন- এমন মডেলকে সামনে রেখে নতুন একটিই চা শ্রমিক সংগঠন তৈরি করছে তৃণমূল। নতুন সংগঠনের নাম দেওয়া হচ্ছে তৃণমূল চা শ্রমিক সংগঠন। গত শুক্রবার সংগঠনটিকে শ্রম দফতরে নথিভুক্ত করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিলিগুড়িতে ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় অফিস চালু করার কথাও বলা হয়েছে।সদস্য দেখানোর প্রক্রিয়াতেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কোনও বাগানে সংগঠনের সদস্যদের নাম, ঠিকানা-সহ তথ্যের তালিকা তৈরি করে ওই বাগান ম্যানেজারকে দিয়ে স্বাক্ষর করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় দফতরে জমা দিতে হবে।