শুক্রবার বিকেলে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর অঞ্চলে তৃণমূলের কর্মিসভা ও যোগদান কর্মসূচি ছিল।
প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ’-এর অভিযোগ তুলে রাজ্য জুড়ে সরব বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে শাসকদলের এক নেত্রী হুঁশিয়ারি দিলেন, আবাস যোজনার ঘর পেতে গেলে তৃণমূল করতে হবে। তৃণমূল করলেই ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে!
আবাস-বিতর্কের আবহে তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মহুয়া গোপের এই মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শাসকদলের বিরুদ্ধে আবারও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা লুটের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে বিজেপি। আগামী দিনে সাধারণ মানুষই এই ধরনের মন্তব্যের জবাব দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি গেরুয়া শিবিরের।
তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য এই মন্তব্যে অনুমোদন দেননি। জেলা সভাপতির মন্তব্য প্রসঙ্গে দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এই মন্তব্যের কড়া নিন্দা করছি। এই ধরনের বক্তব্য দল অনুমোদন করে না। অবাঞ্ছিত, অপ্রয়োজনীয় বক্তব্য। অতি উৎসাহে এই ধরনের বক্তব্যের কারণে এত ভাল কাজ করার পরেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয় দলকে। শীর্ষ নেতৃত্ব নিশ্চয়ই এই ধরনের মন্তব্য নজরে রাখবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বে সরকারের সব প্রকল্পই সাধারণ মানুষের জন্য। এখানে কোনও দল দেখা হয় না। লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বিজেপি পরিবারের বধূও যেমন পাবেন, তেমনই পাবেন সিপিএম নেতার বাড়ির বধূও।’’
শুক্রবার বিকেলে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর অঞ্চলে তৃণমূলের কর্মিসভা ও যোগদান কর্মসূচি ছিল। সেই সভামঞ্চ থেকে মহুয়া বলেন, ‘‘রাজ্য স্তর থেকে পঞ্চায়েত, সব জায়গায় ক্ষমতায় তৃণমূল। তাই, সব সরকারি সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি যদি আবাস যোজনার ঘর আপনাদের লাগে, তবে আপনাকে তৃণমূল করতে হবে।’’ আবাস যোজনা নিয়ে সাধারণ মানুষকে বিজেপি ভুল বোঝাচ্ছে বলেও দাবি করেন জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘আবাস যোজনা নিয়ে বিজেপি গ্রামের মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। তারা গ্রামে গ্রামে ফর্ম বিলি করছে। ওরা বলছে, ওদের সমর্থন করলে ওরা ঘরের ব্যবস্থা করে দেবে। কিছু মানুষ ভুল বুঝে বিজেপি নেতাদের পিছন পিছন ছুটছেন। কিন্তু বিজেপির ক্ষমতা নেই আপনাকে ঘর পাইয়ে দেওয়ার।’’
মহুয়ার এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকারের নিজস্ব কোনও প্রকল্প নেই। সব কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে নিজেদের নামে চালাচ্ছে। টাকা দেবেন মোদী, আর লুট করবেন তৃণমূল নেতারা! এটা আর বেশি দিন চলবে না। মহুয়াদেবী কী ভাবে বলেন যে, তৃণমূল না করলে ঘর পাবে না! ঘরের টাকা কি তৃণমূল দেয়? জনতা জাগছে। এই সব তৃণমূল নেতাদের গাছে বেঁধে রাখবে। সেই দিন আসন্ন।’’