এই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
বিজেপির দলীয় দফতরে খুনের হুমকির পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়ি ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া ঘোঘোমালি বাজারে। বুধবার সকালের ঘটনা। বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি তুফান সাহা ও তাঁর গাড়ির চালক খোকন ব্যাপারিকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে ওই পোস্টারে। তুফান দলের শ্রমিক সংঘটনের জেলা সভাপতিও। এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তুফান। এ দিনই আশিঘর ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি সাদা কাগজে মার্কার দিয়ে বাংলায় পোস্টারটি লেখা ছিল। বিজেপির অফিসের টিনের শাটারের গায়ে সাঁটানো ছিল পোস্টারটি। তাতে ভাঙা এবং ভুল বানানে তুফানের উদ্দেশ্যে যা বলা হয়েছে, তার নির্যাস হল: আপনি যা করছেন। তার জন্য সাজা হবে। আপনাকে বাঁচাতে পাশে দাঁড়াবে খোকন ব্যাপারি। দু’জনকেই গুলি করে মারা হবে। কে বাঁচাবে দেখব। পোস্টারের খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় গিয়ে সেটি খুলে নেয়। পুলিশের অনুমান সকালেই পোস্টারটি সাঁটা হয়েছে। না হলে রাতভরের বৃষ্টিতে পোস্টার ভিজে যেতে পারত।
পোস্টারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে এলাকায়। এ দিন সন্ধ্যায় জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে এলাকায় প্রতিবাদ সভা হয়। ঘটনার জন্য বিজেপি তৃণমূলের দিকে আঙুল তুললেও অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল। তৃণমূলের দাবি, নিজেরাই পোস্টার সেঁটে গোলমাল করতে চাইছে বিজেপি। তৃণমূল নেতাদের দাবি, তুফানবাবুর বাজনার ব্যবসা ছাড়াও একটি ভবন, অর্থলগ্নির ব্যবসা রয়েছে। তাঁর চালকের বিরুদ্ধে ভক্তিনগর থানায় অসামাজিক কাজের অভিযোগ রয়েছে। সেই সমস্ত গোলমালের জেরে পোস্টার পড়ে থাকতে পারে বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। তুফানের পাল্টা দাবি, ‘‘আমার চালকের বিরুদ্ধে পুরনো মামলা ছিল ঠিকই। তবে ও এখন ভাল হয়ে গিয়েছে। আমার অর্থলগ্নি-সহ নানা ব্যবসার কথা বলা হচ্ছে। আমি যা ব্যবসা করি, সব সঠিক উপায়ে। প্রয়োজনে মানুষকে ডেকে সব জানাব। শাসকেরা এলাকায় কোনঠাসা হয়ে এসব করছে।’’ তিনি এবং তাঁর গাড়ির চালক নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েকমাস ধরে ঘোঘোমালি বাজার এবং লাগোয়া এলাকার দখল নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে টানাপড়েন চলছে। সম্প্রতি রথের মেলাকে কেন্দ্র করে সেই গোলমাল আরও বাড়ে। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান রঞ্জন শীলশর্মার বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়া ও নানা অভিযোগ তুলে সরব হন ব্যবসায়ীর একাংশ। তখন তাঁদের নেতৃত্বে তুফানকে দেখা গিয়েছে।
রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, ‘‘তুফানবাবুকে শিলিগুড়ির কটা লোক চেনেন জানি না! ওকে কেন শাসক দলের লোকজন মারতে যাবে। ওই ‘বিখ্যাত’ চালককে নিয়ে কোথাও কী করেছেন কে জানে! উনি নিরাপত্তা চাইলে, আমরা নিরাপত্তা দেব।’’