আহতদের দেখতে হাসপাতালে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —নিজস্ব চিত্র।
‘অশান্ত’ কোচবিহারকে শান্ত করার বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু জেলায় তিনি থাকাকালীনই আবার হিংসার অভিযোগ। ঘটনাস্থল সেই দিনহাটার গীতালদহ। এ বার এক তৃণমূল নেতা এবং দুই কর্মীর হাত-পা বেঁধে অস্ত্র দিয়ে হামলার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। জখম তিন জনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্য দিকে, বিজেপি তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে। তাদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল গোষ্ঠীকোন্দল আটকাতে অক্ষম। তার দায় চাপাচ্ছে বিরোধীদের ঘাড়ে। আহতদের দেখতে হাসপাতালে গেলেন রাজ্যপাল।
শুক্রবার রাতে কোচবিহার আসেন রাজ্যপাল বোস। শনিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। এর পর রাজ্যপাল উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করেন। আক্রান্ত এবং নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে যেমন তিনি দেখা করেছেন, তেমনই কথা বলেছেন আহত তৃণমূল নেতাকর্মীর পরিবারের সঙ্গে। বার্তা দিয়েছেন, ভোটকে কেন্দ্র করে কোচবিহার তথা বাংলায় এমন হিংসা আটকানোর। কিন্তু রবিবার রাজ্যপাল জেলায় থাকাকালীন উত্তপ্ত হল সেই দিনহাটা। গীতালদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোরাম এলাকায় গীতালদহের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মাফিজুর রহমান এবং দুই তৃণমূল কর্মীকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর এবং অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাত ১২টা নাগাদ। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই এলাকায় তাদের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী খলিল মিয়ার ছেলেকেও বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আটকে রাখেন। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি এবং দলের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে বিজেপির লোকজন তাঁদের উপর হামলা চালান এবং তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। আহতদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের কোচবিহারের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে কোচবিহারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁরা। এই খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। যদিও বিজেপির দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। বিজেপির দিনহাটা শহর মণ্ডল সভাপতি অজয় রায় বলেন, ‘‘মাফিজুর রহমান এক জন জেলখাটা আসামি। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এক দল টাকার বিনিময়ে প্রার্থী হয়েছে। আর এক দল টাকা দিতে পারেনি। তাই তারা মারামারি, কাটাকাটি করছে। আর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে বিজেপির উপর।’’ আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান রাজ্যপাল।
অন্য দিকে, রবিবার রাজ্যপাল যাচ্ছেন সিতাই বিধানসভা এলাকা পরিদর্শনে। সেখানে বিএসএফের সঙ্গে রাজ্যপালের একটি বৈঠক রয়েছে বলে খবর। সকাল ১০টা নাগাদ রাজ্যপাল সার্কিট হাউস থেকে রওনা দেন। তবে সিতাই যাওয়ার আগে রাজ্যপাল চলে যান কোচবিহারের বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে তৃণমূলের আহত নেতাকর্মীর সঙ্গে দেখা করেন বোস। আহতদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন।