প্রথম দেখা: ছেলেকে কোলে নিয়ে সীমা। নিজস্ব চিত্র
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম দিয়েছিলেন ফুটফুটে পুত্রসন্তানের। সদ্যোজাত শিশুকে কোলে পর্যন্ত নিতে পারেননি মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের বাসিন্দা সীমা দাস। মাত্র তিন দিনের মাথায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরি যায় শিশুটি। চার মাস পর শনিবার উদ্ধার হল সেই শিশু। এ দিন বিকেলে ইংরেজবাজার থানায় বাবা-মা শিশুটিকে হাতে পেযেছেন। থানায় বসেই শিশুটির ‘আবিষ্কার’ নাম রাখলেন পরিবার ও পুলিশকর্মীরা।
এই ঘটনায় রিঙ্কি দত্ত নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে শহরের বুড়াবুড়িতলা এলাকার বাসিন্দা। প্রাথমিক জেরায় শিশু চুরির ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছে সে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনই আইনি ভাবে বাচ্চাটিকে কাছে পাবেন না ওই দম্পতি। আজ, রবিবার ধৃত মহিলা ও বাচ্চাটিকে আদালতে তোলার কথা পুলিশের। আদালতে বিষয়টি মীমাংসার পরেই সীমার হাতে তাঁর শিশুসন্তানকে তুলে দেওয়া হবে। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ওই শিশুটিকে চুরির ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
গত ১০ এপ্রিল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগ থেকে সীমার তিনদিনের শিশু চুরি হয়ে যায়। সীমার স্বামী বিদ্যাসাগর ধুলিয়ানে তেলেভাজা বিক্রি করেন। তাঁদের দেড় বছর আগে বিয়ে হয়। প্রথম সন্তান হাসপাতাল থেকেই চুরি হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছিলেন এই দম্পতি। তাঁদের সন্তান চুরির ঘটনা হাসপাতালের সিসি ক্যামেরাতেও দেখা যায়। পুলিশের পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে চুরি যাওয়া শিশুর খোঁজ শুরু করেন পরিবারের লোকজনও।
এ দিন বিকেলে ইংরেজবাজার শহরের বুড়াবুড়িতলা এলাকা থেকে শিশুটিকে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকেরা। সীমা বলেন, “হাসপাতালের ওয়ার্ডে রিঙ্কি নামে ওই মহিলা আমার সঙ্গে ভাব জমিয়েছিলেন। আমাকে তাঁর বাড়ি বৈষ্ণবনগর বলেছিলেন। ছেলের খোঁজে বৈষ্ণবনগরের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরেছি। গ্রামের মানুষের পরামর্শে ছেলের খোঁজ শুরু করে হাসপাতাল সংলগ্ন বুড়াবুড়িতলা এলাকাতেও। তখনই ছেলের হদিশ পাই।” এ দিন ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুশি বিদ্যাসাগর বলেন, “এই প্রথম আজ ছেলেকে কোলে নিলাম।”