সরব: শাস্তির দাবিতে মিছিলে পড়ুয়া-অভিভাবক। ছবি: অমিত মোহান্ত
পুণর্নির্মাণে অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে পেটানোর অভিযোগের ঘটনা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ল পুলিশ। তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘কুমারগঞ্জের ওই ঘটনা বর্বরোচিত বললেও কম বলা হয়। আমরাও প্রথম থেকে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছি। ঘটনায় জনরোষ রয়েছে। তাই বলে আবেগতাড়িত হয়ে অভিযুক্তকে পুলিশ লাঠিপেটা করতে পারে না।’’ তাঁকে সমর্থন করে এক তরুণী বলেন, ‘‘অন্যায় পথে ন্যায় পাওয়া যায় না।’’
কুমারগঞ্জে এক তরুণীকে গণধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে বৃহস্পতিবার পুলিশ ধৃত তিন জনকে অকুস্থলে নিয়ে যায়। এর পরে অনেকে দেখেন, পুলিশ এক অভিযুক্তকে লাঠিপেটা করছে। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অধিকাংশ আইনজীবীর মতে পুলিশ ওই কাজ করে ঠিক করেনি। জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের কথায়, হায়দরাবাদ কাণ্ডের ছায়াই তাঁরা এখানে দেখতে পাচ্ছেন।
শুক্রবার বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী নীলাঞ্জন রায়ের দাবি, ওই ছবিটি পুলিশই সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়। অভিযুক্তকে পেটানোর ছবি দেখিয়ে পুলিশ সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাইছে। বোঝাতে চাইছে, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কতটা কড়া। তাঁর কথায়, ‘‘কিন্তু এটি ভুল পথ।’’ জেলা কংগ্রসের কার্যকরী সভাপতি অঞ্জন চৌধুরীরও বক্তব্য, ‘‘রাতের দিকে জেলায় পুলিশি টহল ও নজরদারি ব্যবস্থা প্রায় নেই। রাস্তার মোড়ে কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ারের ভরসায় গ্রাম শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা টিকে আছে। তাই এই সব ছবি দেখিয়ে কোনও লাভ নেই।’’
তবে বালুরঘাট আদালতের এক মহিলা আইনজীবীর কথায়, ‘‘তরুণী খুনের নৃশংসতার কাছে পুলিশের ওই লাঠিপেটা বিষয়টিকে বড় করে দেখানোর কিছু নেই। ঘটনার পুণর্নির্মাণের সময় অভিযুক্তরা অভিনয় করে ঘটনার বর্বরতা দেখানোয় পুলিশ ধৈর্য হারিয়ে সাময়িক উত্তেজনা বশে ওই কাজ করে ফেলেছে।’’
কুমারগঞ্জের সাফানগর এলাকার একাংশ বাসিন্দা অবশ্য অভিযুক্তের সঙ্গে পুলিশের ওই ব্যবহারে তারা খুশি বলে জানান। তাদের কথায় পুলিশ লাঠিপেটা করে কোনও ভুল করেনি। তবে বালুরঘাট আদালতের আইনজীবী বিদ্যুত রায় এবং প্রদীপ মিত্র জানান, ‘‘অভিযুক্তকে লাঠি মারার কোনও অধিকার পুলিশের নেই। এতে মামলাটিতে খারাপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও থাকে।’’