গণরোষের মুখে পুলিশও

পুলিশ জানায়, ওই যুবতী উদ্দেশ্যহীন ভাবে শনিবার বিকেল থেকেই কলমজোতের অলিগলিতে ঘুড়ে বেড়াচ্ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫৪
Share:

আক্রোশ: পুলিশের গাড়ি কাচ ভাঙা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

ছেলেধরা সন্দেহে এক মহিলাকে গণপিটুনি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশও। শনিবার রাতে মাটিগাড়া থানার কলমজোতের ঘটনা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে তিন পুলিশকর্মীকে আক্রমণও করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবতী এবং পুলিশকর্মীরা সকলকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পেয়েছেন। রাতেই গ্রেফতার হয়েছে ৬ জন যুবক। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই যুবতী উদ্দেশ্যহীন ভাবে শনিবার বিকেল থেকেই কলমজোতের অলিগলিতে ঘুড়ে বেড়াচ্ছিলেন। রাতে হঠাৎই রটে যায়, ওই মহিলা বাচ্চা চুরি করতে এসেছেন। তাতেই সন্দেহ বেড়ে যায়। মহিলাকে ঘিরে ভিড় জমতে শুরু করে। এক সময় তাঁকে মারধর শুরু করে। রাত ন’টা নাগাদ পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যায়। কিন্তু তাঁকে উদ্ধার করার কথা বললে মানুষের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে পুলিশের উপর। ভিড়ের মধ্যে থেকেই থেকেই শুরু হয় পুলিশের উপর আক্রমণ। ঢিল ছুড়ে পুলিশের টহলদারি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়। উদ্ধারে যাওয়া সাব-ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, কনস্টেবল হরিশচন্দ্র রায় এবং তরুণকান্তি রায় চোট পান টানা হেঁচড়াতে। কয়েক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার পর মেডিক্যাল কলেজ ফাঁড়িতে চড়াও হয় অনেকে। ভিড়ের মধ্যেই কয়েক জন ফাঁড়ি আক্রমণেরও হুমকি দেয়। সেখান থেকে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি আধিকারিকদের আক্রমণ, কাজে বাধা, মারধর, হুমকির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি বিদিত রায় ভুন্দেশ বলেন, ‘‘পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তার জন্য ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতে তোলা হয়।’’ মাটিগাড়া থানার এক আধিকারিক জানান, এলাকায় পুলিশ গেলে এলাকার কয়েক জন ওই মহিলাকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করে। কিন্তু পুলিশ দাবি না মানলে তাঁদের আক্রমণ করে স্থানীয়রা। ঘটনায় গ্রেফতার সকলেই কলমজোতের বাসিন্দা।

Advertisement

নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতদের। নিজস্ব চিত্র

রবিবার অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হয়েছিল। এলাকার বাসিন্দারাও এসেছিলেন আদালত চত্বরে। তাঁদের মধ্যে এক জন মিনি সিংহ জানান, ওই মহিলা বিকেল থেকেই এলাকায় ছিল। তাঁর কাপড়চোপড় ছেঁড়া দেখে এলাকার মানুষই একটি শাড়ি পড়তে দেয়। তারপর তাঁকে বলা হয়েছিল, চলে যেতে। কিন্তু তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন। পাড়ার বাচ্চাদের দেখে তাঁর বাচ্চা বলে দাবিও করছিল। তখনই আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলা রীতিমতো ইংরেজি লিখতে পারেন। কথা বলেন, হিন্দিতে। অসংলগ্ন কথাবার্তা বলায় তিনি সঠিকভাবে নাম, ঠিকানা পরিচয় বলছেন না। তাকে মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের দেখানো হয়েছে। আপাতত তাকে মেডিক্যাল কলেজ এলাকার একটি নিরাপদ জায়গায় রাখা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement