নিহত বিমল বর্মণদের বাড়ির তালা খুলে ভিতরে ঢুকছে পুলিশ। । ছবি: তাপস পাল
শীতলখুচির হাসপাতাল পাড়ায় গোলাপি রঙের এক তলা বাড়ি। আজ সকালের পর থেকে এলাকার মানুষের কাছে ছিমছাম, শান্ত বাড়িটিই যাবতীয় চর্চার কেন্দ্রে। সকালে এই বাড়িতেই খুন হন তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি বিমল বর্মণ ও তাঁর স্ত্রী ও এক মেয়ে। বেলা পর্যন্ত বাড়িতে ঢোকার মুখের টিনের গেটে, উঠোনে, সিঁড়িতে পড়ে ছোপ-ছোপ রক্তের দাগ। খুনের খবর পাওয়ার পর থেকেই গোটা বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। গেট থেকে স্থানীয় মানুষজন উঁকি মারছেন ঠিকই, তবে পুলিশ বাড়ি ঘিরে থাকায় ভিতরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না কেউ। কেন এই হত্যাকাণ্ড তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনাও।
এ দিন এলাকা জুড়ে দিনভর পুলিশ মোতায়েন ছিল। সন্ধ্যার পর থেকেই পাড়া নিশ্চুপ হয়ে যায়। আতঙ্কে বাড়ির বাইরে পা রাখেননি অধিকাংশ বাসিন্দাই।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, এ দিন ভোরে বাড়ির কর্তা বিমল বর্মণ ও স্ত্রী-মেয়েদের আর্তনাদ কানে আসে তাঁদের। রাতে সবে মাত্র খাবার খেয়ে বিছানায় শুয়েছিলেন প্রতিবেশী মুন্নি খাতুন। ভোরের আলো তখনও ফোটেনি। ‘‘বিমল দাদুর বাড়ি থেকে আসা চিৎকারে কাঁচা ঘুম ভেঙে যায়। আমরা সবাই দাদুর বাড়িতে ছুটে যাই। আমার বাবা দেখেন, দাদু, দাদুর স্ত্রী ও দুই মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। ধারাল অস্ত্র হাতে কয়েক জন যুবক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তত ক্ষণে আরও অনেকেই ছুটে এসেছেন। আমার বাবা-সহ অনেকে মিলে পিছন থেকে এক জনকে ধরে ফেলে। বাকিরা পালায়’’, দাবি করেন আমিনা।
প্রতিবেশীরা জানান, বিমল বর্মণের বড় মেয়ে, কলকাতায় একটি বেসরকারি নাসিংহোমে চাকরিরত রুনা কিছু দিন আগেই বাড়িতে ফিরেছিলেন। এলাকায় শান্তিপ্রিয় বলেই পরিচিত ছিল পরিবারটি। বিমল বাবুর ছোট মেয়ে ইতি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। শান্ত স্বভাবের মিশুকে মেয়েটির সঙ্গে যে এমনটা ঘটতে পারে কল্পনাও করতে পারছেন না তাঁর বন্ধুরা। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার দাবিতে এ দিন শীতলখুচি ও মাথাভাঙায় পথ অবরোধ করেন এলাকাবাসী।