রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ। — নিজস্ব চিত্র।
আদিবাসী যুবকের মৃত্যু ঘিরে বুধবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নকশালবাড়ি ব্লকের হাতিঘিসা এলাকা। অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর ওই যুবককে পিটিয়ে রেললাইনের ধারে ফেলে দেওয়া হয়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। এর প্রতিবাদে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকায় ভাঙচুরেরও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীল নাগাসিয়া (৩৯) নামে হাতিঘিসার এক যুবক মঙ্গলবার মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে চড়ে যাচ্ছিলেন। অন্য গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁর। এর পরই জনা পাঁচের যুবক সুনীলকে গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে তাঁর মেয়ের সামনেই বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে রেল লাইনের পাশ থেকে সুনীলকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার জেরে বুধবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নকশালবাড়ির হাতিঘিসা এলাকা। বুধবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত। এর প্রতিবাদে এশিয়ান হাইওয়ে-২-তে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। অবরোধকারীদের পুলিশ তুলে দেয়। তবে আশপাশের প্রায় ৪টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুরও করা হয় বহু বাড়ি। ঘটনার জেরে থমথমে এলাকা।
দীপল ওরাঁও নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘ও মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিল গতকাল। অন্য গাড়িতে একটু ধাক্কা লাগতেই তাকে এ ভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। বাইরে থেকে লোক এসে এখানে জমি কিনে থাকছে। বেশিরভাগই বাংলাদেশ থেকে আসছে। এই ঘটনা নতুন নয়। পাঁচ অপরাধীকে আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।’’
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার পরভিন প্রকাশ বলেন, ‘‘আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তবে বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বহু বাড়ি ভাঙচুরের খবরও রয়েছে। যারা এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।’’
নিহতের বাড়িতে যান শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ, সহ-সভাধিপতি রোমা রেশমি এক্কা। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। অরুণ বলেন, ‘‘যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর ৪ বছরের মেয়ে রয়েছে। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। ওঁরা খুবই গরিব পরিবার। আমরা পরিবারটির পাশে আছি।’’