উৎসবেও এনআরসি, আশঙ্কায় আদিবাসীরা

মঙ্গলবার করণদিঘির আলতাপুরে ওই  উৎসবে নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আলোচনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনেকেই।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

করণদিঘি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২৭
Share:

পরব: সোহরায়ের মঞ্চে। বুধবার করণদিঘিতে। নিজস্ব চিত্র

উৎসবেও ‘ছায়া’ পড়ল নতুন নাগরিকত্ব আইনের। আশঙ্কা ছড়াল ভিটেমাটি হারানোর।

Advertisement

আদিবাসীদের সোহরায় উৎসবে।

মঙ্গলবার করণদিঘির আলতাপুরে ওই উৎসবে নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আলোচনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনেকেই। সেই সঙ্গে তাঁদের বার্তা, পরিচয়ের নথির কাগজপত্র ঠিক রাখতে হবে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, দু’টি আদিবাসী ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোহরায় উৎসব উপলক্ষ্যে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা চক্র। এই উৎসব আদিবাসীদের কাছে পবিত্র পরব। আদিবাসী প্রধান এলাকায় প্রতি বছর পৌষ মাসে সোহরায় বা বাঁদনা উৎসব পালিত হয়। আয়োজকেরা জানান, উৎসবের মূল উদ্দেশ্য— আদিবাসীদের বিভিন্ন দেবতার আরাধনা। তাতে পরিবারে থাকে সুখ-শান্তি।

করণদিঘিতে ওই উৎসবের আয়োজকেরা জানান, এ বার তাতে কোথাও যেন মিশেছে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উদ্বেগও। আয়োজক কমিটির সভাপতি সঞ্জয় হাঁসদার মন্তব্য, ‘‘উৎসব মঞ্চ থেকে বার্তা দেওয়া হয়, নিজেদের নথিপত্র নিয়ে সজাগ হোন।’’ স্থানীয় একটি গ্রামের গাঁওবুড়ো বাবলু সরেন বলেন, ‘‘অনেক আদিবাসীর কাছেই তো কোনও নথি নেই। তা হলে কী হবে?’’

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক তথা করণদিঘির পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি স্যামুয়েল মার্ডি বলেন, ‘‘আতঙ্কিত হবেন না। নথিপত্র ঠিক করতে পাড়ায় পাড়ায় যাবে ছাত্র-যুব সংগঠনের সদস্যরা।’’ তিনি আরও বলেন, এনআরসি সম্পর্কে জানার যে সুযোগ অন্যদের রয়েছে, আদিবাসীদের তা নেই। তা-ই এ রাজ্যে এনআরসি চালু হলে তাঁরা বিপাকে পড়তে পারেন।’’ তাঁর প্রশ্ন, আদিবাসীরা অনুপ্রবেশকারী নন, তা হলে অসমে এত আদিবাসী নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়লেন কেন? তিনি আরও বলেন, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইনে আদিবাসীদের কোনও লাভ হবে না। বরং বিপদ আরও বাড়বে। তাই আমরা এই আইনেরও বিরুদ্ধে।’’

উৎসবের আয়োজক কমিটির সম্পাদক বিকাশ মুর্মু বলেন, ‘‘অসমে নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ যাওয়া ১৯ লক্ষ মানুষের মধ্যে আদিবাসী রয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ। তাতেই চিন্তা বাড়ছে এ রাজ্যের আদিবাসীদের।’’

এলাকার বাসিন্দা রবিন মুর্মু বলেন, ‘‘আমরা তো প্রকৃতিকে পুজো করি। জল, জঙ্গল আমাদের দেবতা। পুজো করি মাটিকেও। এটাই তো নাগরিকত্বের সব চেয়ে বড় প্রমাণ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement